মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬

কথিত আহলে হাদীসের দলিলহীন ৮০টি মতবাদ

কথিত আহলে হাদীসদের দলীলহীন ৫০টি মতবাদ। নিজে পড়ুন অপরকে share করুন।
-------------------------------------------------
কুরআন হাদীস বিরোধী আহলে হাদীস মতাদর্শের কিছু নমুনা নিচে উপস্থাপন করা হল-
★মতবাদ-১
গায়র মুকল্লিদদের নিকট কাফেরদের জবাই করা পশু হালাল। আর তা খাওয়া জায়েজ। {গায়র মুকাল্লিদ আলেম নওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রচিত “দলীলুত তালেব”-৪১৩,
গায়র মুকাল্লিদ আলেম নূরুল হাসান খান রচিত আরফুর জাদী-২৪৭,
নিজেদের আহলে হাদীস দাবী করে কুরআন হাদীসের রেফারেন্স না দিয়ে ৭এখানে তারা আল্লামা শাওকানী রহ. এর অন্ধ তাকলীদ করেছেন। কুরআন ও হাদীসের দলিল ছাড়া এ তাকলীদ কি [কথিত আহলে হাদীসদের বক্তব্য অনুসারে] শিরক নয়?
★৮মতবাদ-২
৮৭একই সময়ে যতজন মহিলাকে ইচ্ছে বিয়ে করা জায়েজ। চার জনই হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। {গায়র মুকাল্লিদ আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান রচিত “যফরুল লাজী”-১৪১, ১৪২, এবং আরফুল জাদী-১১৫}
এ মতবাদটি সরাসরি কুরআনের আয়াত বিরোধী। এখানে ও কথিত আহলে হাদীসরা কুরআন হাদীস ছেড়ে আল্লামা শাওকানী রহ. এর অন্ধ তাকলীদের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন।
★মতবাদ-৩
স্থলভাগের ঐ সকল প্রাণী হালাল, যার শরীরে রক্ত নেই। {গায়র মুকাল্লিদ আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান রচিত “বুদূরুল আহিল্লাহ”-৩৪৮}
এ বক্তব্যটির পক্ষে কথিত আহলে হাদীসদের পক্ষে কুরআন হাদীসের কী দলিল আছে? কোত্থেকে নাজিল হল এ মতবাদ?
★মতবাদ-৪
মৃত প্রাণী পাক, নাপাক নয়। {দলীলুত তালেব-২২৪}
কুরআন বা হাদীসের কোন বর্ণনার উপর ভিত্তিশীল এ বানানো মতবাদ?
★মতবাদ-৫
নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান সাহেব লিখেন-“শুকর নাপাক হওয়ার উপর আয়াত দিয়ে দলিল দেয়া গ্রহণযোগ্য নয়। বরং তা পাক হওয়াকেই বুঝায়। {বুদূরুল আহিল্লাহ-১৫, ১৬}
তাহলে কথিত আহলে হাদীসদের মতে শুকর পাক? এ মতবাদ কোত্থেকে আমদানী হল?
★মতবাদ-৬
হায়েজ নেফাসের রক্ত ছাড়া মানুষ ও সকল প্রাণীর রক্ত পাক। {দলীলুত তালেব-২৩০, বুদুরুল আহিল্লাহ-১৮, আরফুল জাদী-১০}
কুরআনের কোন আয়াত বা কোন হাদীসের ভিত্তিশীল এ উদ্ভট মতবাদ?
★মতবাদ-৭
ব্যবসায়িক সম্পদে কোন জাকাত নেই। {বুদুরুল আহিল্লাহ-১০২}
কুরআনের কোন আয়াত বা কোন হাদীসের ভিত্তিশীল এ মতবাদ?
★মতবাদ-৮
হাদীসে বর্ণিত ছয়টি বস্তু ছাড়া বাকি সকল বস্তুতে সুদ নেয়া জায়েজ। {দলীলুত তালেব, আরফুল জাদী, আল বুনয়ানুল মারসূস, বুদূরুল আহিল্লাহ ইত্যাদি গ্রন্থ।
কুরআনের কোন আয়াত বা হাদীস দ্বারা এ মতবাদ প্রমাণিত?
★মতবাদ-৯
গোসল ছাড়াই নাপাক ব্যক্তি কুরআন কারীম স্পর্শ করা, উঠানো, রাখা, হাত লাগানো জায়েজ। {দলীলুত তালেব-২৫২, আরফুল জাদী, আল বুনইয়ানুল মারসূস}
এ মতবাদের পক্ষে কী দলিল আছে?
★মতবাদ-১০
স্বর্ণ রোপার অলংকারে যাকাত আবশ্যক নয়। {বুদুরুল আহিল্লাহ-১০১}
কুরআন বা হাদীসের কোথায় আছে এ মতবাদ?
মতবাদ-১১
মদ নাপাক ও অপবিত্র নয়, বরং তা পাক। {বুদূরুল আহিল্লাহ-১৫, দলীলুত তালেব-৪০৪, উরফুর জাদী-২৪৫}
কী দলিল আছে এ মতবাদের?
মতবাদ-১২
স্বর্ণ রোপার অলংকারে কোন সূদ নেই। তাই যেভাবে ইচ্ছে কম-বেশি করে তা ক্রয়-বিক্রয় জায়েজ। {দলীলুত তালেব-৫৭৫}
কোন দলিল আছে কি এ মতবাদের?
মতবাদ-১৩
বীর্য পাক। {বুদূরুল আহিল্লাহ-১৫}
কুরআনে কারীমের কোন আয়াত বা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত এ মতবাদ?
মতবাদ-১৪
সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ার আগেই জুমআর নামায পড়া জায়েজ। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৭১}
কোন স্থানে রাসূল সাঃ বলেছেন যে, সূর্য হেলার আগেই জুমআর নামায পড়া জায়েজ? এ ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস আছে কি?
মতবাদ-১৫
জুমআর নামাযের জন্য জামাত হওয়া জরুরী নয়। যদি দুইজন ব্যক্তিও হয়, তাহলে একজন খুতবা পড়বে, তারপর উভয়ে মিলে জুমআর নামায পড়ে নিবে। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৭২}
ক্রুআন হাদীসের কোন দলিলের ভিত্তিতে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠিত?
মতবাদ-১৬
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট জুমআর নামায অন্যান্য নামাযের মতই কেবল খুতবা ছাড়া। আর কোন বিষয়ে পার্থক্য নেই। {বুদুরুল আহিল্লাহ-৭২}
প্রথমত একথারতো হাদীস বলতে হবে যে, জুমআর নামায ও অন্যান্য নামাযে কোন পার্থক্য নেই।
দ্বিতীয়ত রাসূল সাঃ জুমআর নামাযের মাঝে অন্যান্য নামাযের মাঝে অনেকগুলো পার্থক্যের কথা বলেছেন। যেমন-
জুমাআর নামাযের জন্য গোসল নির্ধারণ করেছেন। অন্যান্য নামাযের জন্য নয়।
খুশবো লাগাতে বলেছেন। অন্য নামাযের ক্ষেত্রে বলেন নি।
মহিলাদের জন্য জুমআর নামায সাকিত করেছেন, অন্যান্য নামায নয়।
মুসাফিরের জন্য জুমআর নামায ফরজ নয়, অন্যান্য নামায ফরজ।
অসুস্থের উপর জুমআর নামায ফরজ নয়, কিন্তু অন্যান্য নামায ফরজ।
এছাড়া আরো অনেক পার্থক্য আছে।৩ তারপরও একথা বলা যে, শুধু খুতবা ছাড়া জুমআ ও অন্যান্য নামাযে কোন পার্থক্য নেই বড়ই আশ্চর্যজনক কথা।
★মতবাদ-১৭
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট দারুল হরবে জুমআ পড়া জায়েজ আছে। {বুদুরুল আহিল্লাহ-৭৪}
কোন হাদীসে রাসূল সাঃ দারুল হরবে জুমআর নামায পড়ার হুকুম দিয়েছেন?
★মতবাদ-১৮
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট তেলাওয়াতে সেজদা দেওয়ার জন্য নামাযী ব্যক্তির জন্য যেসব শর্ত পাওয়া জরুরী তথা সেজদায়ে তেলাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে থাকা জরুরী নয়। {বুদুরুল আহিল্লাহ-৬৮}
মানে হল অজু ছাড়া, কিংবা যেকোন অবস্থায়ই সেজদায়ে তেলাওয়াত দেয়া জায়েজ।
যে কোন অবস্থায় সেজদায়ে তেলাওয়াত দেয়া যায়, এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ এর কোন নির্দেশ বা আমল আছে?
★মতবাদ-১৯
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট মুক্তাদীর যদি৭ ইমামের পিছনে নামাযে কোন ভুল হয়, তাহলে মুক্তাদীর জিম্মায় সেজদায়ে সাহু দেয়া ওয়াজিব। {বুদুরুর আহিল্লাহ-৬৮}
এর মানে হল সে সময় মুক্তাদীর ইমামের অনুসরণের কোন দরকার নেই।
এ ব্যাপারে কোন দলিল আছে কি যে, মুক্তাদী ভুল করলে ইমামের পিছনে থাকা সত্বেও তার উপর সেজদা আবশ্যক? কিংবা সে সময় ইমামের ইক্তিদা করা আবশ্যক থাকে না?
★মতবাদ-২০
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট যুবক নারী-পুরুষের জন্য রূপার গহনা পড়া জায়েজ আছে। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৫৬, দলীলুত তালেব-৪৩৫}
পুরুষের জন্য রূপার গহনা পড়া জায়েজ কোন হাদীসের দলিলের ভিত্তিতে বলা হল?
★মতবাদ-২১
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট বন্দুকের গুলিতে যে প্রাণী মারা হয়, তা খাওয়া জায়েজ আছে। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৩৫}
গুলি চাপ দিয়ে হত্যা করে, কিংবা পুড়ে ফেলে, ধারালো ছুড়ির মত কাটে না। তাই এ দাবির পক্ষে কুরআন হাদীসের দলিল উপস্থাপন করা দরকার। কিন্তু কোথায় কুরআন এবং হাদীস?
★মতবাদ-২২
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট যদি কেউ ইচ্ছেকৃত নামায ছেড়ে দেয়, তারপর তা কাযা করে, তাহলে এ কাযা পড়ার কোন ফায়দা নেই। এ নামায কবুল হবে না। এর কাযা আদায় করাও তার জিম্মায় ওয়াজিবও নয়।{দলীলুত তালেব-২৫০}
তাহলে লোকটি সারা জীবন গোনাহগারই থাকবে?
এ মতবাদের পক্ষে কুরআনের কোন আয়াত বা হাদীস আছে? হাসান বসরী রহ., দাউদ জাহেরী রহ. ও ইবনে হাজম রহ. এর বক্তব্যতো আপনাদের কাছে দলীল হতে পারে না। এটাতো মুকাল্লিদদের কাজ। আর মুকাল্লিদরাতো আপনাদের ভাষায় মুশরিক, নাউজুবিল্লাহ!
★মতবাদ-২৩
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট সকল প্রাণীর প্রস্রাব পাক। {বুদূরুল আহিল্লাহ-১৪,১৫,১৬}
ফুক্বাহাদের বক্তব্য রেখে কুরআন হাদীসের কী আছে এ মতবাদের পক্ষে?
★মতবাদ-২৪
মরে ভেসে উঠা মাছ ছাড়া সমুদ্রের সকল প্রাণী হালাল, চাই জীবিত হোক বা মৃত। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৩৩, আরফুল জাদী-২৪৭}
ইমাম শাফেয়ী রহ. ও ইমাম মালেক রহ. এর মুকাল্লিদ যদি আপনারা না হয়ে থাকেন, তাহলে এ দাবীর পক্ষে হাদীস পেশ করুন। নতুবা হাদীস পড়–ন-যাতে রাসূল সাঃ বলেছেন যে, আমার জন্য দু’টি মৃত প্রাণী হালাল করা হয়েছে, একটি হল টিড্ডি, অপরটি হল মাছ। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৩১৪}
এ হাদীসটি এসে অন্য হাদীসের ব্যাপকতাকে খাস করে দিয়েছে। তারপরও আপনাদের মনগড়া মতবাদের পক্ষে কুরআন ও হাদীসের কী দলীল আছে?
★মতবাদ-২৫
গায়র মুকাল্লিদের নিকট স্বর্ণ-রূপার পাত্র ব্যবহার করা জায়েজ। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৫৪}
ইমাম আবু হানীফা রহ., ইমাম শাফেয়ী রহ. প্রমুখদের তাকলীদ যেহেতু তারা করেন না, তাই তাদের বক্তব্য উদ্ধৃত না করে কুরআন হাদীসের দলিল দিন এ মতবাদের পক্ষে।
★মতবাদ-২৬
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট কেউ কোন মহিলার সাথে যিনা করে, তাহলে উক্ত মহিলার মেয়েকে যিনাকারী বিয়ে করতে পারবে, যদিও সেই মেয়েটি তারই যিনার কারণে জন্ম নিয়ে থাকে। {আরফুল জাদী-১১৩}
গায়র মুকাল্লিদ হিসেবে ইমাম শাফেয়ী রহ. বা ইমাম রাজী রহ. এর মতামতের তাকলীদ না করে কুরআন হাদীসের দলিল দিন এ মতাবাদের পক্ষে।
★মতবাদ-২৭
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট হস্ত মৈথুন করে বীর্যপাত করা, কিংবা অন্য কোন পদ্ধতিতে বীর্যপাত করা এমন ব্যক্তির জন্য জায়েজ যার স্ত্রী নেই। আর যদি তার গোনাহ করার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে এভাবে বীর্যপাত করা ওয়াজিব বা মুস্তাহাব । {আরফুল জাদী-২১৪}
গায়র মুকাল্লিদ ভাইয়েরা কারো তাকলীদ করে ফুক্বাহাদের বক্তব্য উদ্ধৃত না করেজ কুরআন হাদীস থেকে এ মতবাদের দলীল দিন।
★মতবাদ-২৮
গায়র মুকাল্লিদের নিকট কুরবানীর একটি বকরী অনেক ব্যক্তির পক্ষ থেকে যথেষ্ট। চাই তা শত ব্যক্তির পক্ষ থেকেই করা হোক না কেন! {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৯১}
এ মতবাদের পক্ষে কুরআন হাদীসের কী দলিল আছে?
★২৯ মতবাদ-
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট রাসূল সাঃ এর রওজা যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা জায়েজ নয়। {আরফুল জাদী-২৫৭}
কোন হাদীসে এসেছে যে, রাসূল সাঃ এর রওজা জিয়ারতের জন্য সফর করা নাজায়েজ?
গায়র মুকাল্লিদ হয়ে থাকলে কোন ব্যক্তির উক্তি পেশ না করে হাদীস পেশ করুন।
★মতবাদ-৩০
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট নাপাক পড়ারজ দ্বারা কোন পানিই নাপাক হয় না। পানি কম হোক বা বেশি হোক। নাপাকটি পায়খানা প্রস্রাব হোক বা অন্য কিছু হোক। হ্যাঁ, যদি রং বা গন্ধ যদি প্রকাশ পায়, তাহলে নাপাক হয়ে যাবে। {আরফুল জাদী-৯}
কম পানিতেও নাপাক পড়লে তা নাপাকহ হয় না, শুধু গন্ধ হলে বা রং পাল্টে গেলে নাপাক হবে, একথার দলীল কোন হাদীস?
সাহাবীর কথা, বা ফুক্বাহাদের কথাতো গায়র মুকাল্লিদের কাছে দলিল হতে পারে না। তাহলে এ মতবাদ কিভাবে সাবিত হল?
★মতবাদ-৩১
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট অজু ছাড়া ব্যক্তি কুরআন শরীফ স্পর্শ করতে পারে। {আরফুল জাদী-১৫}
এ মতবাদের পক্ষে কী দলীল আছে ফুক্ব্হাদের কওল ছাড়া?
★মতবাদ-৩২
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট যদি নামাযী ব্যক্তি নাপাক শরীরে নামায পড়ে, তাহলে তার নামায বাতিল হয় না। তবে সে গোনাহগার হবে। {বুদূরুল আহল্লিাহ-৩৮}
এ মতাবাদের পক্ষে ইবনে মাসউদ রাঃ বক্তব্য, কিংবা হানাফী ফক্বীহদের কথাতো আপনাদের পক্ষে দলীল হতে পারে না, এর পক্ষে কুরআন বা হাদীসের কী দলীল আছে?
★মতবাদ-৩৩
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট শরীর থেকে যতই রক্ত বের হোক এতে অজু ভাঙ্গবে না। {দস্তুরুল মুত্তাকী-২৯}
কুরআন হাদীসের কোন দলীলের ভিত্তিতে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠিত?
★মতবাদ-৩৪
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট মুসাফির ব্যক্তি মুকিম ইমামের পিছনে ইক্তেদা করবে না, যদি ইক্তেদা করতেই হয়, তাহলে শেষের দুই রাকাতে ইক্তেদা করবে। {আল বুনইয়ানুল মারসুস-১৬৩}
এ মতবাদ কুরআনের কোন আয়াত বা নবীজী সাঃ এর কোন হাদীস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত?
★মতবাদ-৩৫
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট মাথা মুন্ডানো খেলাফে সুন্নাত এবং খারেজীদের আলামত। {আল বুনইয়ানুল মারসূস-১৬৯}
এ মতবাদের পক্ষে ফক্বীহদের বক্তব্য রেখে কুরআন হাদীসের দলীল কই?
★মতবাদ-৩৬
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট “আল্লাহ” শব্দে জিকির করা বেদআত। {আল বুনইয়ানুল মারসূস-১৭৩}
এ মতবাদের পক্ষে কুরআন বা হাদীসের কী দলীল আছে?
★মতবাদ-৩৭
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট কতিপয় সাহাবাগণ ফাসেক ছিলেন (নাউজুবিল্লাহ)। এমনকি হযরত মুয়াবিয়া রাঃ কবীরা গোনাহ ও বিদ্রোহ করেছেন (নাউজুবিল্লাহ)। {আল বুনইয়ানুল মারসূস-১৮৪}
আক্বায়েদের কিতাবের রেফারেন্স, বা ফুক্বাহদের কথা না বলে কুরআন হাদীসের বক্তব্য উপস্থাপন করুন কোথায় আছে যে, সাহাবাগণ ফাসেক ও গোনাহে কবীরার মুরতাকিব ছিলেন?
★মতবাদ-৩৮
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট মহিলাদের নামায পূর্ণ শরীর ঢাকা ছাড়াও জায়েজ আছে, চাই একাকী নামায পড়–ক বা অন্যান্য মহিলাদের সাথে নামায পড়–ক, কিংবা স্বীয় স্বামীর সাথে নামায পড়–ক, বা অন্য কোন মাহরামের সাথে নামায পড়–ক, সর্বাবস্থায়ই নামায সহীহ হয়ে যাবে। সর্বোচ্চ মাথা ঢাকা থাকলেই হবে। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৯}
নামায সহীহ হওয়া এটা শরয়ী হুজ্জত, তাই এর পক্ষে কুরআন হাদীসের দলিল আবশ্যক। গায়র মুকাল্লিদগণ এটা কোন দলীলের ভিত্তিতে বলে থাকেন?
★মতবাদ-৩৯
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট নামাযী ব্যক্তির কাপড় পাক হওয়া শর্ত নয়। যদি কেউ কোন ওজর ছাড়াই ইচ্ছেকৃত নাপাক কাপড় পরিধান করে নামায পড়ে নেয় তাহলে নামায হয়ে যাবে। {দলীলুত তালেব-২৬৪, আরফুল জাদী-৩২, বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৯}
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট যেহেতু সাহাবাদের আমল হুজ্জত নয়, তাই এসব উপস্থাপন না করে হাদীস উপস্থাপন করুন এ মতবাদের পক্ষে।
★মতবাদ-৪০
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট টাখনুর নিচে পায়জামা পরিধান করার দ্বারা অজু ভেঙ্গে যায়। {দস্তুরুল মুত্তাকী-২৯}
টাখনুর নিচে পায়জামা পরিধান করলে অজু ভেঙ্গে যায় এমন হাদীস কোথায় আছে? গোনাহ হওয়া এক বিষয়, আর অজু ভাঙ্গা আরেক বিষয়। এতটুকু বুঝার ক্ষমতাও কি আপনাদের হয়নি?
মতবাদ-৪১
রমজান মাসে রোজাবস্থায় যদি কেউ ইচ্ছেকৃত খেয়ে ফেলে তাহলে গায়র মুকাল্লিদদের নিকট উক্ত ব্যক্তির জিম্মায় কাফফারা আদায় করা আবশ্যক নয়। {দস্তুরুল মুত্তাকী-১০৩}
★মতবাদ-৪২
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট পর্দার বিধান কেবল মাত্র রাসূল সাঃ এর সম্মানিত স্ত্রীগণের জন্যই নাজিল হয়েছে। উম্মতের মহিলাদের জন্য নয়। [আল৭ বুনইয়ানুল৮৮৩ মারসূস-১৬৮}
উম্মতী মহিলাদের জন্য পর্দা জরুরী নয়,এমন কথা কুরআন হাদীসের কোথায় আছে?
মতবাদ-৪৩
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট সজারু খাওয়া জায়েজ। যেহেতু হারাম হওয়ার কোন হাদীস প্রমানিত নেই। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৩৫১}
এ হযরতদের কাছে জিজ্ঞাসা সজারু খবীশ প্রাণী হওয়ার জন্য কোন হাদীসের দলীল লাগবে? “খবীশ প্রাণী হারাম” সে হাদীসের অন্তর্ভুক্ত সজারু নয়? তাহলে সজারু হালাল কোন হাদীসের ভিত্তিতে?
★৭মতবাদ-৪৪
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট কাফেরদের থেকে হিলা করে সুদ খাওয়া জায়েজ। {আল বুনইয়ানুল মারসূস-১৭৩}
এ মতবাদের পক্ষে কুরআন বা হাদীসের কী দলীল আছে? গায়র মুকাল্লিদ হয়ে মুকাল্লিদদের মত ব্যক্তির বক্তব্যের দলীল কেন দেয়া হয়?
★মতবাদ-৪৫
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট পশু জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ না বলে থাকলে খাওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বললেই খাওয়া জায়েজ হয়ে যাবে। {আরফুল জাদী-২৪১}
এ মতবাদের দলীল কি? ইমাম বুখারীরহা বক্তব্যতো আপনাদের পক্ষে দলীল হতে" পারে না। দলীল দিতে হবে কুরআন ও হাদীস থেকে।
★মতবাদ-৪৬
কাফের অবস্থায় যদি কোন কাফের মান্নত করে, তারপর উক্ত কাফের মুসলমান হলে, কাফের অবস্থায় যে মান্নত করেছিল তা পূর্ণ করা তার উপর ওয়াজিব। {আরফুল জাদী-২৫৭}
তাহলেতো কাফের অবস্থায় কাযাকৃত সকল ইবাদতও কাযা করা উচিত। তাই নয়কি? যাহোক এ উদ্ভট বক্তেব্যের পক্ষে কুরআন হাদীসের দলীল কি?
★মতবাদ-৪৭
ফরজ আদায়কারী ব্যক্তি নফল আদায়কারীর পিছনে ইক্তেদা করলে শুদ্ধ হবে গায়র মুকাল্লিদদের নিকট। {আরফুল জাদী-৩৭}
সাহাবীদের বক্তব্য যেহেতু গায়র মুকাল্লিদদের নিকট দলীল নয়, তাই “নফল আদায়কারীর পিছনে ফরজ আদায়ের ইক্তেদা সহীহ হয়” মর্মে সহীহ হাদীস উপস্থাপন করা উচিত। কিন্তু হাদীস কোথায়?
★মতবাদ-৪৮
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট নাবালেগ ছেলে যদি বালেগ ব্যক্তিদের ইমামতি করে, তাহলে এ ইমামতী সহীহ আছে। [আরফুল জাদী-৩৮}
রাসূল সাঃ এর কওল বা ফেল এ ব্যাপারে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করা উচিত। কিন্তু আছে কি কোন দলীল?
★মতবাদ-৪৯
গায়র মুকাল্লিদদের নিকট ঈদের নামায একাকী একজন ব্যক্তির দ্বারাও সহীহ হয়ে যায়। এজন্য জামাত হওয়া জরুরী নয়। {বুদূরুল আহিল্লাহ-৭৮}
এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ থেকে কোন কওলী, ফেলী বা তাক্বরীরী হাদীস আছে? তবে কোন যুক্তিতে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হল?
★মতবাদ-৫০
গায়রে মুকাল্লিদগণ নামাযের বিভিন্ন রুকনকে ফরজ, সুন্নাত মুস্তাহাব বলে মন্তব্য করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হল যেহেতু তারা কোন ব্যক্তির অনুসরন তথা তাক্বলীদকে শিরক মনে করেন, শুধু কুরআন ও হাদীসই দলীল বলে প্রচার করে থাকেন, তাহলে ফরজ, সুন্নাত, ওয়াজিব ও মুস্তাহাব ইত্যাদি পরিভাষা কুরআন হাদীসের কোথায় আছে? এসব কুরআনের কোন আয়াতে আছে? হাদীসের কোন কিতাবে আছে?
যদি না থাকে, তাহলে তারা এসব বলে নিজেদের সংজ্ঞা অনুযায়ী গায়রে মুকাল্লিদ থাকেন কী করে?
★★শেষ কথা
প্রিয় পাঠকবৃন্দ!
এখানে গায়রে মুকাল্লিদ বা কথিত আহলে হাদীসদের কিছু মতবাদ বর্ণনা করা হল। আপনারাই লক্ষ্য করুন-যাদের পবিত্রতা, নাপাকী, হালাল-হারাম, জায়েজ-নাজায়েজ, সুন্নাত-বেদআত ইত্যাদি বিষয়ের উপর সামান্য জ্ঞানও নেই, তারাই দাবি করছে যে, তারা হাদীসের উপর আমল করেন। আর মুকাল্লিদরা সবাই মুশরিক ফির রিসালাত।
যদি কেউ চারজনের বদলে আটজন মহিলাকে বিয়ে করে নেয়, তাহলে কোন সমস্যা নেই।
যদি বদনা ভরা পানিতে কিছু প্রস্রাব পড়ে যায়,তাতে কোন সমস্যা নেই! পানি পাক! যতক্ষণ না রং, গন্ধ বা স্বাদ পাল্টে না যাবে!
জীনা করে উক্ত মহিলার বাচ্চাকে বিয়ে করা জায়েজ!
যদি বেশ্যা মহিলা তওবা করে, তাহলে বেশ্যাগিরি করে কামানো টাকা হালাল হয়ে যাবে!
রক্ত, বীর্য, পশুর প্রস্রাব পবিত্র!
সূদ নিতে ইচ্ছে হলে হীলা করে নিতে পারবে!
সূর্য পশ্চিম দিগন্তে সামান্য হেলে পড়ার আগেই জুমআর নামায পড়তে পারবে!
সমুদ্রের কচ্চপ, কাঁকড়া, ব্যাঙ, সামুদ্রিক কুকুর সব খাওয়া জায়েজ!
আল্লাহ আল্লাহ জিকিরই যেহেতু বেদআত, তাহলে আর থাকলোই কি?
যে সাহাবাগণের উপর দ্বীনের ভিত্তি, তারাই যদি ফাসেক হন তাহলে আর কী থাকে?
মদ নাকি নাপাকই না!
শরীর থেকে যতই রক্ত ঝরুক, অজু এতই মজবুত যে এতে ভাঙ্গবে না!
কিন্তু পায়জামা টাখনু থেকে একটু নিচে নামলেই সাথে সাথেই অজু ভেঙ্গে যাবে!
কাফেরদের জবাইকৃত পশু খাওয়া জায়েজ!
মহিলাদের গহনায় কোন যাকাত নেই। তারা একদম স্বাধীন এ ব্যাপারে!
ব্যবসায়ীরা গায়রে মুকাল্লিদদের মুবারকবাদ দেয়া দরকার। কারণ বন্দুকের গুলিতে মারা প্রাণী একদম হালাল! তাই তাদের ব্যবসা করার সুযোগ গেল বেড়ে।
পুরুষদের জন্য রূপার গহনা পরিধান করা জায়েজ!
পর্দার বিধান শুধু রাসূল সাঃ এর সম্মানিত স্ত্রীগণের জন্যই খাস। অন্য কোন মহিলাকে পর্দা করতে হবে না। বেপর্দা হয়ে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াতে পারবে।
মাথা ঢেকে রেখে কাপড় খোলা রাখা অবস্থায়ও মহিলাদের জন্য নামায পড়া জায়েজ আছে!
মোটকথা
গায়রে মুকাল্লিদ হতে পারলে দুনিয়াটাই জান্নাত হয়ে যাবে, সব কিছুই করা যাবে মনে খুশি মত।

মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৬

ইমাম শেরে বাংলা রহঃ



#সময়ের_মুজাদ্দিদ_যামানার_রাযী, ইমামে আহলে সুন্নাত,গাজীয়ে দ্বিনও মিল্লাত ইমাম শেরে বাংলা
                (রহমতুল্লাহি আলাইহি):
~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~∞~

#বিলাদত_শরীফ/ জন্ম:
~~~~~~~~~~~~~~
বার আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার অন্তর্গত মেখল নামক গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারে  ১৩২৩ হিজরী, ১৩১৩ বাংলা এবং ১৯০৬ ইংরেজীতে এক শুভ মুহূর্তে মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত, ইমামে আহলে সুন্নাত, আল্লামা গাজী সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা (রহ.) জম্মগ্রহণ করেন।

#শিক্ষা_জীবন:
~~~~~~~~~
তাঁর পিতার নাম হযরত মাওলানা শাহসূফী সৈয়দ আব্দুল হামিদ আলকাদেরী (রহ.)। শেরে বাংলা (রহ.) বাল্যকাল থেকেই অতি মেধাবী ও সৎ চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। শৈশবকালে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা আপন পিতার নিকট লাভ করেন অতঃপর তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসা-এ-মঈনু ল ইসলামে ভর্তি হন। ঐ মাদ্রাসা দেওবন্দী কওমি নিয়ন্ত্রিত হলেও তৎকালে কয়েকজন সুন্নী আক্বীদার আলেমও সেখানে শিক্ষকতা করতেন। উক্ত মাদ্রাসায় অধ্যয়ন কালে দেওয়ান নগর নিবাসী প্রখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল (রহ.) কে প্রিয় শিক্ষক হিসেবে লাভ করেছিলেন। অতঃপর তিনি উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য হিন্দুস্থানে গমন করেন। দিল্লীর বিখ্যাত ফতেহ্পুর আলীয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে আরবী, উর্দু, ফার্সি ভাষার লিখিত বিভিন্ন শাস্ত্রে উপর অসাধারণ পাণ্ডিত্য ও বুৎপত্তি অর্জন করেন। উক্ত মাদ্রাসার পিন্সিপ্যাল শেরে বাংলা (রহ.) এর মেধাশক্তি দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁর খরচ বহন করার ঘোষণা দেন। অতঃপর হিন্দুস্থান থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের খেদমতে নিয়োজিত হন। তিনি হাটহাজারী এমদাদুল উলুম আজিজিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা ও রাউজান, রাঙ্গুনিয়া সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অনেক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

#সামাজিক_ও_রাজনৈতিক_অবদান:
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও আল্লামা গাজী শেরে বাংলা (রহ.) এর অবদান ছিল অপরিসীম। তিনি তদানীন্তন বৃটিশ আমল হতে পাক-ভারত বিভক্তির পর প্রথম পাক ভারত মহাযুদ্ধের সময় পর্যন্ত একাধারে সুদীর্ঘ সতের বৎসর নিজ এলাকা মেখল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তৎকালীন ফুড কমিটির প্রেসিডেন্ট পদ অলংকৃত করেন। এমনকি চেয়ারম্যান ইলেকশনের পূর্বে মুফতি ফয়জুল্লাহ তার অনুসারীদের উদ্দেশ্য বলে, “তোমরা শেরে বাংলাকে ভোট দেবে” তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে উত্তর দেয়, শেরে বাংলার সাথে আমার যে বিরোধ তা অন্য ব্যাপার কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর মত সুবিচারক ও ন্যায় বন্টনকারী বিশ্বস্ত কোন লোক তোমরা পাবে না।

“#শেরে_বাংলা” ও “#শেরে_ইসলাম” উপাধি_লাভঃ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
#প্রথমত: সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে রাজকীয় গ্র্যাণ্ড মুফতী কর্তৃক “শেরে ইসলাম“ ও শেরে বাংলা” উপাধি লাভ ১৯৫৭ সালে মোজাদ্দেদে দ্বীন ও মিল্লাত,শামসুল মোনাজেরীন,তাজুল ওলামা হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) দ্বিতীয়বার পবিত্র হজ্ব পালন উপলক্ষে সৌদি আরব গমন করেন । ইতিমধ্যে হাটহাজারী ওহাবীরা হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) কে হেয় প্রতিপন্ন ও অপদস্থ করার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে । তারা তাদের বন্দুবর ও পৃষ্ঠপোষক সৌদি সরকার র্পূবাহেু চিঠির মাধ্যমে হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) এর সৌদি আরব গমন সম্পর্কে অবহিত করে এবং সৌদি কর্তৃপ দেয় যে,এই লোক মুসলমানদেরকে কাফের বলে । সুতরাং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হোক। নির্ধারিত দিনে নির্তিষ্ট সময়ে হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) এয়ারপোর্ট থেকে জেদ্দা পৌঁছার পূর্বেই সৌদি পুলিশ তাঁকে এরেষ্ট করে । পুলিশ জানায় ,” আপনার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে । হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) দৃঢ় কণ্ঠে তাদেরকে বলেন, হজ্বে বায়তুল্লাহ ও মদীনায় হাযিরা দিতে এসেছি। ’’অতঃপর হুজুরকে সৌদি সরকারের গ্র্যাণ্ড মুফতী সৈয়দ আলবী সাহেবের নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। গ্র্যাণ্ড মুফতী হুজুরকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি সৈয়দ আজিজুল হক শেরে বাংলা ?’’ হযরত শেরে বাংলা (রহঃ) হ্যাঁ সুচক জবাব দিলেন । মুফতী সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,’’ আপনি কি মু’মিন মুসলমানদের কাফের বলেন?” হযরত শেরে বাংলা (রহঃ) তীক্ষ্ন কণ্ঠে জবাব দিলেন, আমি তো মু’মিন মুসলামনদের কাফের বলিনা। কিন্তু কিছু কিছু মুসলামন নামধরী লোককে কাফের বলি। যারা তাদের কিতাবে কুফ‘রী কালাম লিখেছে ।”উদাহরণ স্বরুপে তিনি কিতাবের উদ্ধৃতি সহকারে ‘আল্লাহ মিথ্যা কথা বলতে পারেন’ নাউযুবিল্লাহ‘- ইত্যাদি ইত্যাদি ওহাবীদের বিভিন্ন জঘন্য ও কুফরী উক্তির উল্লেক করলেন। এতে মুফতী সাহেব প্রমাণ জানতে চাইলেন। হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) তাঁর সাথে বহনকৃত ওহাবীদের লেখা বিভিন্ন কিতাব খুলে প্রমাণ উপস্থাপন করলেন।অতঃপর হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) এর সাথে এ সমস্ত আক্বীদা বিষয়ক মাসায়েল নিয়ে উক্ত গ্র্যাণ্ড মুফতী সাহেবের সাথে দীর্ঘক্ষণ বাহাছ হয় । হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) এ সমস্ত কুফরী কালামের বিরুদ্ধে এবং সঠিক আক্বীদা উপর সারগর্ভ যুক্তি প্রদর্শন করেন। হুজুরের সাহসিকতাপূর্ণ অসীম জ্ঞানের কাছে মুফতী সাহেব সম্পূণ পর্যুদস্থ ও পরাজিত হন। হুজুরের বিরুদ্ধে উতোপূর্বে গৃহীত সমস্ত ওয়ারেণট প্রত্যাহার করা হয় এবং তাঁকে সসম্মানে হজ্ব পালন করার অনুমতি প্রদান করা হয় । হজ্ব সমাপনের পর হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) জিয়ারতে মদিনার উদ্দেশ্যে মদিনা মোনা পৌঁছণেন। হায়াতুন্নবী রাহমাতুল্লিল আলামীন (দঃ) এর পবিত্র জেয়ারত লাভে ধন্য হলেন । অতঃপর সাহাবায়ে কেরামের মাজার জেয়ারত শেষে হুজুর পাক (দঃ) এর রওজা পাকের পার্শ্বে এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে জেয়ারত শুরু করলেন যেখানে কোন কবর শরীফ নেই বলে কর্তব্যরত সৌদি পুলিশরা বিশ্বাস করেন। তাই কর্তব্যরত পুলিশ হুজুরকে জিজ্ঞেস করলেন,’’ এই স্থানে তো কোন কবর নেই। আপনি কার কবর জেয়ারত করছেন? হুজুর উওর দিলেন,’’হযরত ফাতেমাতুজ‘ জাহরা (রাঃ) এর মাজার জেয়ারত করছি ।’’ পুলিশ বাহিনী আশ্চর্যান্বিত হয়ে জানতে চাইলেন,’’ এ দাবীর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ আছে কি?’’ হুজুর দীপ্ত কণ্ঠে বললেন,”হ্যাঁ অবশ্যই আছে। পুলিশ বাহিনী বললেন,”তাহলে আপনি আমাদের সাথে হুকুমতে চলুন। ’’অতঃপর সৌদি পুলিশ হুজুরকে সৌদি সরকারের স্থানীয় মুফতীবৃন্দের কাছে নিয়ে যান হুজুর তাঁদের নিকট দলিল সহকারে প্রমাণ উপস্থাপন করেন । তাঁরা হুজুরের অকাট্য যুক্তি- তর্কের কাছে হার মানতে বাধ্য হন। অবশেষে পূর্বে উল্লেখিত সৌদি সরকারের রাজকীয় গ্র্যাণ্ড মুফতী সৈয়দ আলবী সাহেবকে তর্কে অংশগ্রহণ করার জন্য আহবান করে আনা হয়। হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) এর উদ্ধৃতি মতে মিশরের আল‘ আজহার বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থগার সংরক্ষিত রেফারেণ্স গ্রন্থখানি সৌদি সরকারী লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয়। হুজুর উক্ত কিতাব থেকে দলিল ও প্রমাণ উপস্থাপন করলেন। অবশেষে মুফতী সাহেব হুজুরের অগাধ পাণ্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞান ও যুক্তির নিকট সম্পূর্ণ পরাজিত হলেন। অতঃপর উক্ত গ্র্যাণ্ড মুফতী সাহেব হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) কে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে অসীম জ্ঞানের স্বীকৃতি স্বরুপ’ শেরে ইসলাম ’ওরফে শেরে বাংলা’ উপাধিতে ভূষিত করে লিখিত সনদপত্র প্রদান করেন। হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) কে সৌদি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আগত বিশেষ অতিথিবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত সভায় রাজকীয় মেহমান হিসেবে দাওয়াত প্রদান করা হয়।উক্ত সম্বর্ধনা সভায় সৌদি সরকার স্বয়ং উপস্থিত থাকেন।

তাছাড়া সৌদি সরকারের উচ্চপদস্থ সম্মনিত ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত থাকেন। সভায় বাদশাহ‘ আগমন করার সাথে সাথে সবায় দাঁড়িয়ে বাদশাহ‘ কে সম্মান জানালের কিন্তু হযরতুল আল্লামা গাজী শাহ‘ সৈয়দ মোহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা আল‘ কাদেরী (রহঃ) এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন। তিরি প্রশ্ন উথ্তাপন করলেন,”আপনাদের আক্বীদা অনুযায়ী কারো সম্মানার্থে দাঁড়ানো বেদআত ও শির‘ক।”অতঃপর তিনি ওহাবীদের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওহাব লিখিত ‘কিতাবুত তাওহীদ’থেকে সরাসরি প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন,”অতএব বাদশাহ‘র সম্আনে দাঁড়িয়ে আপনারা বেদআত ও কঠিন গোনাহ‘র কাজ করেছেন।”এতে উপস্থিত গ্র্যাণড মুফতী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ আলেমগণ কোন উত্তর দিতে পারলেন না। তাঁরা সকলে এখানে ও পরাজিত হতে বাধ্য হলেন এবং অকুণ্ঠচিত্তে হুজুরের অগাধ জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের ভূয়সীপ্রশংসা করলেন উক্ত সম্বর্ধনা সভায় সৌদি বাদশাহ‘ হুজুরের অসাধারণ জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপঢোকনস্বরুপ মূল্যবান পাহড়ি ও ছড়ি প্রদান করে বিশেষ রাজকীয় মেহমান হিসেবে হুজুরকে অভিনন্দন ও সম্মন জানালেন। শুধু তাই নয় রাজকীয় মেহমান হিসেবে সসম্মানে বিদায় জানানোর কালে তিনি ভবিষ্যতে যতবার হজ্ব করতে আসতে চান তার অগ্রিম অনুমতি নামা প্রদানকরা হয়। (সুবহানাল্লাহ)

#দ্বিতীয়ত: চল্লিশ দশকের প্রারম্ভে চট্টগ্রামের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা আব্দুল হামিদ ফখরে বাংলা (রহ.) অনেক আলেমসহ কাদিয়ানীদের সাথে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে মোনাজেরায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রশ্ন-উত্তর চলাকালে আল্লামা গাজী শেরে বাংলা (রহ.) তাদের উত্তাপিত প্রশ্নের উত্তর প্রদান পূর্বক সেই বিষয়ে প্রশ্ন করতেই আল্লাহর অসীম কুদরতে কাদিয়ানীরা শোচনীয় পরাজয় বরণ করে। অতঃপর বাতিলপন্তিরা পরাজিত হয়ে মজলিস ত্যাগ করে। উপস্থিত সকলে তাঁর এরূপ বুদ্ধিদীপ্ত জ্ঞান ও দুর্দান্ত সাহস দেখে অবাক হয়ে যায়। তখন আল্লামা আব্দুল হামিদ ফখরে বাংলা (রহ.) সবার সমর্থন নিয়ে ঘোষণা করেন, আজ আমি এই সভায় আলেম সমাজের প্রক্ষ থেকে ঘোষণা দিচ্ছি মাওলানা সৈয়দ আজিজুল হক আলকাদেরীকে “শেরে বাংলা” উপাধিতে ভূষিত করা হল। তখন উপস্থিত জনতা শ্লোগানে শ্লোগানে আকাশ- বাতাস মুখরিত করে তুলে। এ ছাড়াও তিনি বাতিলপন্তিদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মোনাজেরায় অংশগ্রহণ করে বিজয় লাভ করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতকে সমুন্নত রেখেছেন অনেক সময় তাঁর হাতে পরাজয় বরণকরে বদ-আক্বীদা পোষণকারীরা তাঁর উপর হামলা করে রক্তাত্ব করে দেয়। একবার ডাক্তার মৃত ঘোষনার আট ঘন্টা পর তিনি জীবিত হয়ে উঠে বসে পড়েন।

*তাইতো বড়ভাই মাঃসৈয়দ হাসান মুরাদ কাদেরী বলেন-

“ম্যাঁ তো বিমারে নবী হোঁ”
 দিলেন তিনি ঘোষণা
 নবীর প্রেমে দিওয়ানা, ~~~~~~~~~~~~~
~~~~~~~~~~~~~হাটহাজারীর প্রাণকেন্দ্রে
                                    দেখ তাহার আস্তানা
                                    হযরতে আজিজুল হক
                                    শেরে বাংলা মাওলানা৷
__________________________________________চলবে-
সুত্র:- আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ¤Official¤ ৷৷৷

মানুষের মৃত্যূর পর স্বজনের কিছু করণীয় আমল


মৃত্যুব্যাক্তির দাফনের পর স্বজনদের করণীয় কিছু আমল:
----------------------------------------
*সুরা ইয়াছিন পডা:
-----------------
নবী পাক (দ:) এরশাদ করেন, “এটি (সূরা এয়াসিন) ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তির কাছে (’ইনদা) পাঠ করো।” [সুনানে ইবনে মাজাহ, কিতাবুল জানায়েয # ১৪৩৮]
সুনানে ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারী আরও বলেন, “হুযূর পাক (দ:)-এর ‘ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তি’ এই বাণীর উদ্দেশ্য ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তি অথবা (’আও’) ইন্তেকালপ্রাপ্ত (বা’দ) ব্যক্তিও।” [শরহে সুনানে ইবনে মাজাহ আল-সনদি, প্রাগুক্ত]
হুযূর পূর নূর (দ:) এরশাদ ফরমান, “একরা’ও ‘আলা মওতাকুম এয়াসীন”, মানে ‘তোমাদের মধ্যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের কাছে সূরা এয়াসীন পাঠ করো।’
রেফারেন্স
 * আবূ দাউদ কৃত ‘সুনান’ (জানায়েয)
* নাসাঈ প্রণীত ‘সুনান’ (’আমল আল-এয়াওম ওয়াল-লায়লাহ)
 * ইবনে মাজাহ রচিত ‘সুনান’ (জানায়েয)
 * ইবনে হিব্বান লিখিত ‘সহীহ’ (এহসান); তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন।
*মৃত্যব্যাক্তির কবরের সামনে দাডানো:----
সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আমর ইবনুল আস্ (রা:)-এর কথা বর্ণিত হয়েছে; তিনি বলেন: ’তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে, তখন আমার কবরের পাশে ততোক্ষণ দাঁড়াবে যতোক্ষণ একটি উট যবেহ করে তার গোস্ত বিতরণ করতে সময় প্রয়োজন হয়; এতে আমি তোমাদের সঙ্গ লাভের সন্তুষ্টি পাবো এবং আল্লাহর ফেরেশতাদের কী জবাব দেবো তা মনঃস্থির করতে পারবো।’
* জানাজার নামাজের পুর্বে ছানা ও দুরুদ পডা:
ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আববাস -কে বলতে শুনেছি: উমার (রা:)-এর লাশ জানাযার খাটিয়ায় রাখা হলে উপস্থিত লোকজন, তার চারপাশে ভীড় করে দুআ-কালাম ও সালাত শুরু করে দেয়, তখনো সালাত আদায়ের জন্য লাশ উঠানো হয়নি। আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। বুখারী ৩৬৭৭, মুসলিম ২৩৮৯,

*জানাজার নামাজের পর সুরা ফতেহা পাঠ এবং দোয়া করা:
সুনানে আবি দাউদ’ পুস্তকের ’আওন আল-মা’বুদ শরহে সুনানে আবি দাউদ’ শীর্ষক ব্যাখ্যাগ্রন্থে বিবৃত হয়: “এবং নাসাঈ (শরীফে) হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত হাদীসটি (যা’তে এরশাদ হয়েছে), মহানবী (দ:) জানাযার নামায পড়েন এবং সূরা ফাতেহা পাঠ করেন।”
*জানাজার নামাজের পর দোয়া/মোনাজাত করা:
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=10153660300705999&set=pb.554860998.-2207520000.1451883470.&type=3&theater
*মানুষটি কেমন ছিলেন সেটি জিজ্ঞাস করা:
জানাজার নামাজের পর অনেক জায়গায় একজন ব্যাক্তি দাডিয়ে জিজ্ঞাস করেন,মানুষ টি কেমন ছিলেন,সেটির ভিত্তিও কোরআন হাদীসে রয়েছে:-
*মৃত্যব্যাক্তির জন্য তাহলীল পড়ার হকুম:
https://www.facebook.com/854596921225165/photos/pb.854596921225165.-2207520000.1451884724./942358745782315/?type=3&theater
*মৃত্যব্যাক্তি কে নিয়ে যাওয়ার সময় কালেমা/তাসহীহ পড়া:
https://www.facebook.com/854596921225165/photos/pb.854596921225165.-2207520000.1451957540./972589629425893/?type=3&theater
*সুরা বাকার তেলোওয়াত করা:
বর্ণিত আছে যে আল-’আলা ইবনে আল-লাজলাজ তাঁর সন্তানদেরকে বলেন, “তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে এবং কবরের ‘লাহদ’ বা পার্শ্ববর্তী খোলা জায়গা স্থাপন করবে, তখন পাঠ করবে - বিসমিল্লাহ ওয়া ‘আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ - অর্থাৎ, মহান আল্লাহর নামে এবং মহানবী (দ:)-এর ধর্মীয় রীতি মোতাবেক। অতঃপর আমার ওপর মাটি চাপা দেবে এবং আমার কবরের শিয়রে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষের আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবে; কারণ আমি দেখেছি হযরত ইবনে উমর (রা:) তা পছন্দ করতেন।”
রেফারেন্
* ইমাম বায়হাকী, ‘আল-সুনান আল-কুবরা’ (৪:৫৬)
 * ইবনে কুদামা, ’আল-মুগনী’ (২:৪৭৪, ২:৫৬৭, ১৯৯৪ ইং সংস্করণের ২:৩৫৫)
 * আত্ তাবারানী, ‘আল-কবীর’; আর ইমাম হায়তামী নিজ ‘মজমা’ আল-যওয়াইদ’ (৩:৪৪) গ্রন্থে জানান যে এর সকল বর্ণনাকারীকেই নির্ভরযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
*চাল্লিশা:
 ইছালে ছওয়াবের উদেশ্য মৃত্যব্যাক্তির ৪০ দিন পর খাবর দাবারের আয়োজন করা হাদীস সম্মত:
প্রিয়নবী (দ) হযরত আমীরে হামযাহ (রা:) শাহাদাতের তৃতীয়, দশম, বিংশতম, চল্লিশতম দিবসে এবং ছয়মাস ও বছর দিবসে খাদ্য তৈরী করে এর সওয়াব পৌছিয়েছেন,।আর সাহাব কেরামও অনুরুপ করেছেন।
তথ্যসুত্র: রিয়াদুল মাকাসিদ, মোল্লা ছিদ্দীক যীরী কৃত: জামেউল ফিকাহ’য়, মাজমুয়ায়ে রেওয়ায়েত, ফাতউয়ায়ে না্ওয়াদির…উদ্বৃত: ফতোয়াজে আজিজিয়া।
*তৃতীয় দিন,চতুর্থ দিন খাবার বিতরণ:
হযরত আবু যার (রা:) থেকে বর্ণীততিনি বলেন রাসুল (দ:) ইরশাদ করেন,রাসুলর সন্তান হযরত ইব্রাহিম (রা) ওফাতের তৃতীয় দিন অতিবাহেত হওয়ার পর তখন আবু যার (রা:) নবী কারীম (দ:) নিকট আসলেন।তার সাথে ছিল কিছু শুকনো খেজুর,উঠের দুধ এবং যবের রুটি।তারপর তিনি সেইগুলি নবী কারীম (দ:)এর সামনে রাখলেন অতপর নবী কারীম (সা:) সুরা ফাতিহা,তিনবার সুরা ইখলাস পড়লেন।
তারপর বললেন- হে আল্লাহ !হযরত মোহাম্মদ মোস্তাফার উপর রহমত বর্ষন করো যেভাবে তোমার শানের উপকারী হয়,এবং তিনিও সেটির উপকারী হয়।তারপর দুহাত উঠালেন এবং তার চেহারা মোবারকে মাসেহ করলেন।তারপর তিনি হযরত আবু যার কে খাবারগুলি বন্ঠন করে দিতে বললেন। আর নবী কারীম (দ:) বললেন এই খাবারগুলির সওয়াব আমার ছেলে ইব্রাহিমের জন্য।
সুত্র: মোল্লা আলী কারী প্রনিত:কিতাবুল আওযাজান্দি ।
*যেয়াফত:
হযরত আবু হুরায়রাহ (রা থেকে বর্ণীত-
তিনি বলেন আমরা রাসুলে পাক (দ:) এর সাথে একটি যিয়াফতে উপস্থিত ছিলাম,উনার সামনে রান্না করা ছাগলের বাহুর মাংশ পেশ করা হল,তিনি এর থেকে এক টুকরা খেলেন এবং বললেন আমি কিয়ামতের দিন সমগ্র মানব জাতির সর্দার হব।’
বোখারী শরীফ:হাদিস নং-৩১০৪ (ই ফা)
এই ছাডাও হযরত আব্বাস (রা:)প্রতি বছর নবীজির যিয়াফত উপলক্কে একটি লাল উঠ জবেহ করতেন।
*মেজবান:
*খাওয়ানো একটি উত্তম আমল:--
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর{র:} হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,এক ব্যাক্তি রাসূল{স:}এর কাছে আরয করল,ইসলামে কোন অব্যসটি উওম?রাসূল{স:}উওরে বললেন,অপর কে খানা খাওয়ানো এবং পরিচিত অপরিচিত সবাই কে সালাম দেওয়া।[বুখারী ও মুসলিম)
বিস্তারিত পাবেন…………
https://www.facebook.com/854596921225165/photos/pb.854596921225165.-2207520000.1426841915./917646538253536/?type=3&theater
*কবর যেয়ারত:

বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৬


আজ থেকে প্রায় ৮৫০ বছরেরও বেশি আগের কথা । ভারতীয় উপমহাদেশ তখন পৌত্তলিকতার বেড়াজালে আবদ্ধ । তাওহীদের বাণী তখনও সেভাবে প্রচার হয়নি । কিছু মুসলিম রাজারা থাকলেও তাদের অবস্থা ছিল খুবই করুণ । আল্লা-হ' রাব্বুল আ-লামী-ন এর মর্জি হল তার একজন প্রিয় বান্দাকে এখানে প্রেরণ করা হবে । রাসুল সাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর রওজা শরীফ থেকে সেই মহান ব্যক্তিকে নির্দেশ দেয়া হল ভারতবর্ষ পরিচালনার । কিন্তু ভারতে আসার পথঘাট তার জানা ছিল না । তাই তাকে একটি আতা ফল দেয়া হল যেখানে ভারতের আজমীরে আসার মানচিত্র ছিল । সেই মানচিত্র ধরেই তিনি ভারতবর্ষে আগমন করেন । আর তিনি হলেন নবী করীম সাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর বংশের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র আতায়ে রাসুল হযরত খাজা গরীবে নওয়ায মুঈনুদ্দিন হাসান চিশতী সানজেরী আজমেরী রহমাতুল্লাহে আলাইহি । ৪০ জন সহচর সহ তিনি ভারতবর্ষের আজমীরে আগমন করেন । পথিমধ্যে তিনি লাহোরে অবস্থিত হযরত দাতা গঞ্জে বখশে লাহোরী রহমাতুল্লাহে আলাইহি এর পবিত্র মাজার শরীফে অবস্থান করেন এবং সেখানে ৪০ দিনের চিল্লা দেন । যে ঘরে তিনি চিল্লা দিয়েছিলেন সে ঘরটি এখনো সংরক্ষিত আছে ।
সে সময় ভারতের সে রাজ্যের রাজা ছিল পৃত্থিরাজ । হযরত খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহে আলাইহি যখন তাওহীদের বাণী প্রচার শুরু করেন তখন পৃত্থিরাজ তার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র করে । তিনি সব ষড়যন্ত্র সফলভাবে মোকাবেলা করেন ।
ভারতবর্ষে প্রায় ৫০ বছর তিনি জাহেরীভাবে ছিলেন এবং এ সময়ের মধ্যে তিনি প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষকে ইসলাম ধর্মে দিক্ষিত করেন । সুবহানাল্লাহ !!!
আল্লা-হ প্রদত্ত অনেক কারামতের অধিকারী ছিলেন তিনি । কিছু বর্ণনায় এসেছে যে, উনার মর্তবা এমনই ছিল যে, উনার চেহারা মোবারক দেখেই অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন । সুবহানাল্লাহ !!!
হযরত খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহে আলাইহি কর্তৃক আনাসাগরের পানি অদৃশ্য হওয়াঃ
আল্লা-হ রাব্বুল আ-লামী-ন প্রদত্ত হযরত খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহে আলাইহি এর অনেক কারামতের মধ্যে একটি কারামত এ ঘটনাটি উনার সম্পর্কে লেখা প্রায় সব কিতাবেই বর্ণিত আছে ।
রাজা পৃত্থিরাজ যখন দেখলেন মানুষ দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করতেছে তখন তিনি খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতী রহমাতুল্লাহে আলাইহি কে বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র করতে লাগল । তিনি শাদীদেব নামে এক তান্ত্রিককে প্রেরণ করলেও সে বিফল হয় এবং সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে । সুবহানাল্লাহ !!!
এতে পৃত্থিরাজ আরো চিন্তিত হয়ে পড়ে । তার মন্ত্রীপরিষদ তাকে বলল, 'আপনি মুসলমানদের জন্য আনা সাগরের পানি বন্ধ করে দিন । তাহলে দেখবেন পানি ছাড়া তাদের জীবন উষ্ঠাগত হয়ে পড়বে এবং এখান থেকে পালিয়ে জান বাচাবে' । রাজাও সে মোতাবেক ব্যবস্থা করে ফেলল । আদেশ জারি করা হলো, 'কোন মুসলমান ফকির বা মুসলমান আনা সাগরের পানিতে অবগাহন করতে পারবেনা, হাত-মুখ ধৌত করতে পারবেনা, অজু করতে পারবেনা এবং রান্না বান্না বা অন্য কাজের জন্য পানি আনাসাগর হতে নিয়ে যেতে পারবে না' । এরই মধ্যে হযরত খাজাবাবার শিষ্য-খাদেম আনাসাগরে গেল অজু করতে কিন্তু পাহারাদারগণ তাকে পানির নিকটে যেতে দিল না । সে এসে হযরত খাজাবাবাকে ব্যাপারটি বর্ণনা করলেন । হযরত খাজাবাবা বুঝতে পারলেন এটা পৃত্থিরাজের একটা নতুন চাল । তিনি তার এক বয়স্ক খাদেমকে ডেকে বললেন, "তুমি আমার কাসাচুবিটি(কাষ্ঠ নির্মিত অর্ধ ডিম্বাকৃতি ৮/১০ ইঞ্চি লম্বা পেয়ালা, যা সাধারণতঃ ফকির দরবেশগণ ব্যবহার করে থাকেন) নিয়ে আনা সাগরে যাও এবং পানি ভর্তি করে নিয়ে এসো । আমি আস্তানার এই টিলার উপর দাঁড়িয়ে রইলাম । আমার দৃষ্টি তোমাকে অনুসরণ করবে" ।
তিনি কাসাচুবা হাতে নিয়ে আনা সাগর পর্যন্ত আসলেন এবং পানি নিতে চাইলেন । কিন্তু পাহারাদার তাকে বাধা দিল । তিনি অনুনয় বিনয় করে বললেন, এ কাসাচুবিটায় সামান্য কিছু পানি নিব । সৈন্যগণ প্রথমে নিষেধ করলেও পরে ভাবল অল্প কিছু পানি নিলে কি এমন হবে । তাই তারা পানি নিতে দিল । সে খাদেম কাসাচুবিতে করে পানি ভর্তি করে পিছন ফিরে দেখলেন হযরত খাজাবাবা টিলার উপর দাঁড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছেন । এদিকে খাদেম আনা সাগরের সিড়ি বেয়ে উঠে আসতেই একটি হৈচৈ পড়ে গেলো ।
'আনা সাগরের পানি গায়েব । আনা সাগর পানি শূন্য হয়ে পড়েছে' । কেউই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না । সবাই অবাক বিস্ময়ে আনা সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে । পাহারাদারদের প্রধান রাজদরবারে হাজির হয়ে বলল, 'মহারাজ সর্বনাশ হয়ে গেছে । মুসলমান ফকিরদেরকে আনা সাগরের পানি ব্যবহার করতে না দেওয়ায় তারা যাদু দিয়ে সব পানি শুকিয়ে ফেলেছে' । রাজা বলল তিনি যাদু দিয়ে পানি শুকিয়ে ফেলেছে তোমরা তোমাদের যাদুগীরের যাদু দ্বারা পানি ভরাট করিয়ে নাও । পাহারাদার বলল মহারাজ আজমীরে এমন কোন শক্তিধর যাদুগীর নেই যে যাদু বলে এমন অসাধ্য সাধন করতে পারবে । শাদীদেব থাকলে হয়ত চেষ্টা করে দেখতেন । কিন্তু তিনি তো ধর্মত্যাগী । তাকেও এখন পাওয়া যাবে না ।
রাজা দলবল নিয়ে নিজেই পরিস্থিতি দেখতে গেল । গিয়ে দেখলে অবস্থা খুবই করুণ । পানির জন্য চারদিকে হাহাকার । প্রজাদের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসতে লাগল । তিনি ভেবে চিন্তে দেখলেন যিনি গায়েব করেছেন তিনিই একমাত্র পারেন এই পানি ফিরিয়ে আনতে । তিনি দু'জনকে নির্দেশ দিলেন হযরত খাজাবাবার আস্তানায় যেয়ে উনাকে বুঝিয়ে পানি ফেরত আনার জন্য সম্মত করতে ।
দু'জন গিয়ে হযরত খাজাবাবার আস্তনায় কুর্নিশ করে দাঁড়িয়ে রইল এবং সব কিছু খুলে বলল এবং তাদের আচরণের জন্য ক্ষমা চাইল । দয়ার সাগর হযরত খাজা গরীবে নওয়ায রহমাতুল্লাহে আলাইহি তার খাদেমকে নির্দেশ দিলে কাসাচুবি হাতে নিয়ে পানি আনা সাগরে ফেরত দিয়ে আসতে । খাদেম সে মোতাবেক গেল পানি ফিরিয়ে দিতে । রাজার লোক দু'জনও ছুটলেন পেছন পেছন ঘটনা কিভাবে ঘটে তা দেখার জন্য । খাদেম কাসাচুবির পানি আনা সাগরে ফেরত দিল আর ঐ দিকে হযরত খাজাবাব নির্দেশ দল পানি পূর্ণ হয়ে যাওয়ার আর সাথে সাথে পানি পূর্ন হয়ে গেল আনা সাগর । সুবহানাল্লাহ !!!
আসলে এ ঘটনাটির বৈজ্ঞানিক ব্যাখা একটি বইয়ে এভাবে লিখা হয়েছে যে পানি হচ্ছে হাইড্রোজেন গ্যাস এবং অক্সিজের গ্যাসের সমন্ব্য় । যদি গ্যাস দুটি আলাদা থাকে তাহলে আমরা তা দেখব না কিন্তু মিলে গেলে দেখব ।
এ কারামতের দৃশ্য অবলোকনের পর বহু মন্দিরের পূজারী, অনেক রাজপুত ও অনেক পাহারাদার সৈনিক ও অনেক সাধারণ মানুষ হযরত খাজাবাবার হাতে হাত রেখে কালেমা পাঠ করে ইসলাম গ্রহণ ও বায়াত গ্রহণ করেছিলো । সুবহানাল্লাহ !!!

প্রয়োজন আরেকজন ইমাম শেরে বাংলা রহঃ

প্রয়োজন আরেকজন ইমাম শেরে বাংলা রহ: এর
----------<<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>>-----------------
আল্লামা আজিজুল হক শেরে বাংলা রহ:,যার নামের সাথে জড়িয়ে আছে সুন্নীয়ত বিপ্লবের এক অনন্য ইতিহাস।যাকে কখনো চোখে দেখি নি,যার বক্তব্য ও কখনো কানে শুনি নি।তবে হ্যা,আমাদের এলাকার অনেক মুরব্বী ওনাকে চোখে দেখেছেন,ওনার বক্তব্য শুনেছেন।তাদেরকে বিভিন্ন সময় ইচ্ছে করে পরীক্ষা করতাম,বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে ইমাম শেরে বাংলা রহ: কে ভুল প্রমাণের চেষ্টা করতাম।না কখনোই সফল হতে পারি নি,তাদের ইমান এতই মজবুত যে তাদের বক্তব্য একটাই,ইমাম শেরে বাংলা রহ: যা বলে গেছেন তার উপড় আমৃত্যু আমরা অটল থাকব।

ইমাম শেরে বাংলা রহ: এর উপড় তাদের  এত বিশ্বাস হবেই না বা কেন...??..ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যার সাথে বিতর্কে পরাজিত হয়েছিলেন তৎকালীন সৌদি গ্রান্ড মুফতি সৈয়দ আলভী সাহেব,ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যার প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে চট্টগ্রামের লালদিঘীর ময়দান থেকে পালিয়ে ছিল জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্টাতা আবুল আলা মওদুদী,ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যার সাথে আজিজুল হক মাদানী সহ অনেক বড় বড় দেওবন্দ আলেম বহসে পরাজিত হয়েছিলেন।ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যাকে সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ শেরে ইসলাম উপাধি দিয়েছিলেন।ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যার দোয়াতে ১ জন নৌকার মাঝির ঘরে নঈমউদ্দীন আল কাদরী রহ: এর মত আলেম জন্ম নিয়েছিলেন।ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যাকে উদ্দেশ্য করে আবদুল হামিদ বোগদাদী রহ: বলেছিলেন,আমি আবদুল হামিদ যদি  ফখরে বাংলা হয়ে থাকি তাহলে আজিজুল হক হল শেরে বাংলা।ইনিতো সেই শেরে বাংলা যিনি শিশু অবস্থায় পিতার সাথে মাইজভান্ডার দরবারে গেলে ইউসুপে ছানী গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারী ক. মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে শুধু ওনার দিকে চেয়ে চেয়ে হাসতেন, ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যার ব্যাপারে আলে রাসূল দ: সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি রহ: বলেছিলেন,যদি শেরে বাংলা তোমার উপড় রাজী থাকে তবে আমি সৈয়দ আহমদ ও তোমার উপড় রাজী।ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যিনি নিজে পীর হয়ে ও জনসাধরনকে বলেছিলেন,তোমরা সিরিকোটির হাতে বায়াত হও,ওনার দামান নাজাতের উসীলা।ইনিই তো সেই শেরে বাংলা যার ব্যাপারে হেফাজতের আমির আহমদ শফির ওস্তাদ মরহুম মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেছিলেন,শেরে বাংলা হল এলমের জাহাজ...

হে ইমাম শেরে বাংলা রহ:,আসুন দেখে যান আপনার রক্তে রঞ্জিত সেই সুন্নীয়তের বাগানকে কিভাবে আমরা নষ্ট করছি।কিছু সুবিধাবাদী আজ সুন্নীয়তকে নিজেদের পকেটে বন্দী করতে ব্যস্ত এবং কিছু মোনাফেক ক্ষমতার লোভে সুন্নীয়তকে করেছে দ্বিখন্ডীত আর অনেক পীর টাকার লোভে সেই সুন্নীয়তকে দিয়েছে শিয়াদের কাছে বিক্রি করে....আজ এই কঠিন মুহুর্তে আপনার মত আরেকজন শেরে বাংলা যে আমাদের বড়ই প্রয়োজন....

এই মাসের ১২ ই রজব খাজায়ে বাঙ্গাল,ছানীয়ে ওয়ায়েস করনী,আশেকে রাসূল দ: আল্লামা আজিজুল হক শেরে বাংলা কাদেরী রহ: এর ওফাত দিবস...অধম শিমুলের এই লিখাটি আপনার দরবারে হাদিয়া হিসেবে কবুল করুন...

বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬

হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাসান মঈনুদ্দীন চিশতী রহঃ

নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম আম্মা বা’দ।
যুগে যুগে জ্ঞানের আলোকবর্তিকা নিয়ে যেসব মনীষী পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন,যারা অন্যায় ও অসত্যের কাছে কোনোদিন মাথানত করেননি, ইসলাম ও মানুষের কল্যাণে সারা জীবন যারা পরিশ্রম করে গেছেন তাদের অন্যতম হজরত মঈনুদ্দিন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি। আমাদের মহানবী বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী ইমামুল মুরসালীন,হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওছাল্লাম বলেছিলেন,আমি তোমাদের জন্য রেখে যাচ্ছি ২টি জিনিস যা আকড়ে ধরলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবেনা আর তা হলো আল্লাহর কোরআন এবং আমার সুন্নাহ। ১৪০০ বছর আগের সেই বাণী আজ আমাদের কাছে পৌঁছার পিছনে অনেকেরি অবদান রয়েছেন যাদের অন্যতম আল্লাহ পাকের প্রিয় বান্দারা যাদের কে আমরা ওলি আল্লাহ বা আল্লাহর বন্দু বলে থাকি। এখন প্রশ্ন : ওলি কারা ?
উত্তর দেয়ার পূর্বে এটাই বলে রাখি যে আজকাল আমাদের সমাজে যাদের মুর্খতার কারণে আজ ওলির সঙ্গাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে এরা কী আসলে ওলি ! নাকি------ তা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যদি আপনার জানা থাকে ওলির সঙ্গা। আসলে ওলিরা তাদের ইহকালীন জীবনে বিপথগামী মানুষকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওছাল্লাম এর সুন্নতের রজ্জু আঁকড়ে ধরে সঠিক পথে থাকার দিশারী হিসেবেই কাজ করেছেন।বন্ধুরা সত্যের অন্বেষণ করাটাই যেন হয় আমাদের কাজ।
✦ ওলি (وليّ) শব্দের অর্থ, আল্লাহর প্রিয়পাত্র/বন্ধু বা অভিভাবক। আরবী ভাষায় “আউলিয়া” শব্দটি “ওলি'র বহুবচন। তারাই আল্লাহর প্রিয়পাত্র হন যারা সত্যিকারভাবে আল্লাহকে ভয় করে জীবন পরিচালনা করেন, সৎ আমল করেন, তার আদেশগুলো বাস্তবায়ন করেন এবং নিষেধকৃত বিষয়গুলো থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখেন এবং কোরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখেন।
❋আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ওলি সম্পর্কে ইরশাদ করেন, أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
মনে রেখো যারা আল্লাহর (ওলি) বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।
الَّذِينَ آمَنُواْ وَكَانُواْ يَتَّقُونَ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে।
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা।(সুরা ইউনুছ আয়াত :৬২-৬৪)
❋পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন,
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ-যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র।
وَمَن يَتَوَلَّ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ فَإِنَّ حِزْبَ اللّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ
আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী।( সূরা মায়িদা,আয়াত ৫৫-৫৬)
❋আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেন, وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِينَ আর আল্লাহ পরহেযগারদের বন্ধু। (সূরা জাসিয়া:১৯)
❋আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেছেন- وَاللّهُ وَلِيُّ الْمُؤْمِنِينَ আর আল্লাহ হচ্ছেন মুমিনদের বন্ধু। 

(সূরা আলে ইমরান ৬৮)
❋আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেছেন-
اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوُرِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ أَوْلِيَآؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে। (সূরা বাকারা ২৫৭)
❋আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওছাল্লাম বলেন, যে বান্দার চেহরা দেখলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে খোদার ভয় আসে সেই ওলি।
❋হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওছাল্লাম আরো বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﻯ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻴًّﺎ ﻓَﻘَﺪْ
ﺁﺫَﻧْﺘُﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﺮْﺏِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻤَّﺎ
ﺍﻓْﺘَﺮَﺿْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﻳَﺘَﻘَﺮَّﺏُ ﺇِﻟَﻲَّ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﻓِﻞِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺃُﺣِﺒَّﻪُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺘُﻪُ ﻛُﻨْﺖُ ﺳَﻤْﻌَﻪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺴْﻤَﻊُ ﺑِﻪِ ﻭَﺑَﺼَﺮَﻩُ ﺍﻟَّﺬِﻱ
ﻳُﺒْﺼِﺮُ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﺒْﻄِﺶُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺭِﺟْﻠَﻪُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺇِﻥْ
ﺳَﺄَﻟَﻨِﻲ ﻟَﺄُﻋْﻄِﻴَﻨَّﻪُﻭَﻟَﺌِﻦْ ﺍﺳْﺘَﻌَﺎﺫَﻧِﻲ ﻟَﺄُﻋِﻴﺬَﻧَّﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺮَﺩَّﺩْﺕُ ﻋَﻦْ
ﺷَﻲْﺀٍ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺎﻋِﻠُﻪُ ﺗَﺮَﺩُّﺩِﻱ ﻋَﻦْ ﻧَﻔْﺲِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦِ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻭَﺃَﻧَﺎ
ﺃَﻛْﺮَﻩُ ﻣَﺴَﺎﺀَﺗَﻪُ .
হজরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার ওলির(বন্ধু) সাথে শত্রুতা করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে। আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে।অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি। যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে কিছু চাইলে, আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে,তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই।আমি যা করার ইচ্ছা করি,সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুগি না কেবল মুমিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার মন্দকে অপছন্দ করি।(সহিহ বুখারী৬৫০২)

❋ শেখ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, 'মনুষ্যত্ব গোশত, চর্বি ও চর্ম (দেহ) নয়; মনুষ্যত্ব বন্ধু (আল্লাহর) তুষ্টি ছাড়া অন্য কিছু নয়।

✦ সম্মানিত বন্ধুরা-এ থেকে বুঝতে পারি মুমিনরাই আল্লাহর ওলি,যারা ঈমান আনবে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করে
এবং আল্লাহর অনুগত থাকে নিষিদ্ধ সকল প্রকার হারাম কাজ বর্জন করে তাকওয়া অবলম্বন করবে কোরআন ও সুন্নাহ মত চলে তারাই ওলি।আসলে যারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতী থাকেন তারাই
(মোমিন মুত্তাকীরাই)ওলি আল্লাহ বা আল্লাহর বন্ধু।
❋এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (সূরা হুজুরাত১৩)

 পরিচিতি 
---------------✦
হজরত মইনুদ্দিন চিশতী (উর্দু معین الدین چشتی) হলেন চিশতীয় ধারার ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক। তিনি গরিবে নেওয়াজ (غریب نواز) নামেও পরিচিত। তিনি ভারতে চিশতী ধারার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক সিলসিলা এমনভাবে পরিচিত করেন পরবর্তীতে তার অনুসারীরা যেমন,বখতিয়ার কাকী,নিজমুদ্দিন আউলিয়াসহ আরো অনেকে ভারতের ইতিহাসে সুফি ধারা এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।তিনি ১১৪১ সালে ৫৩৬ বা ৫৩৭ হিজরি সনে ইরানের কুরাশান (অধুনিক আফগানিস্তানে) সিস্তান প্রদেশ’র চিশ্ত শহরের উপকণ্ঠে সানজর গ্রামে আত্ম্যাতিক পুরুষ মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম খাজা গিয়াসুদ্দিন হাসান। মাতার নাম উম্মুল ওয়ারা। তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন।পিতার তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করেন। শৈশবে কুরআন হিফজ করেন।
পরে জ্ঞানার্জনের জন্য প্রথমে সমরকন্দ ও পরে বোখারা গমন করেন। বোখারায় তিনি মাওলানা শরফুদ্দিন ও মাওলানা হাসান উদ্দিনের ন্যায় জগদ্বিখ্যাত আলেমদের কাছে এলমে শরিয়তের জ্ঞান অর্জন করেন। পিতার উত্তরাধিকার হিসাবে একটি ছোট আঙ্গুরের বাগান থেকে জীবিকা অর্জন করা শুরু করেন। এ বাগানে একদিন কাজ করার সময়ে সুফি ইব্রাহিম কান্দুজি নামক একজন আল্লাহওয়ালা বুজুর্গের সংস্পর্শে এসে তার জীবনের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়।তিনি একজন মানবসেবক ও আধ্যাত্মিক সাধক ছিলেন।কোরআন ও হাদিসের গভীর জ্ঞান অর্জন করার পর তিনি আত্মশুদ্ধির জ্ঞান অর্জনের জন্য হক্কানি পীর-মাশায়েখদের সন্ধানে সিরিয়া, হামাদান, কিরমান, তাবরিজ, বোখারা, সমরখন্দ, আস্তারাবাদ, হিরাত, বালখ প্রভৃতি স্থান সফর করেন। অবশেষে বোখারা থেকে নিশাপুরে আসেন। সেখানে চিস্তিয়া তরীকার অপর প্রসিদ্ধ ছুফি সাধক হজরত ওসমান হারুনি চিশতি (রহ.)-এর কাছে বায়াত হয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে মনোনিবেশ করেন।এবং একজন পরিপূর্ণ মোমিন হিসেবে নিজেকে বিকশিত করেন।মানুষকে সত্য ও সুন্দরের এবং ইসলামের শান্তি বাণীর সন্ধান দেওয়াই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।৫৮৩ হিজরীতে তিনি পবিত্র হজ্ব ব্রত পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফ যান। তিনি আরব থেকে ইরাক, ইরান ও আফগানিস্তান হয়ে ভারতের আজমিরে বসতি স্থাপন করেন।

 ধর্ম প্রচার 
----------------✦
হজরত মঈনুদ্দিন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন পাক-ভারত উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে কিংবদন্তিতুল্য একজন ঐতিহাসিক ছুফি ব্যক্তিত্ব। তিনি স্বীয় পীর উসমান হারুনীর নির্দেশে ভারতে আগমন করে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেন এবং তারই মাধ্যমে বহু লোক ইসলাম গ্রহণ করেন।তিনি ভারতবর্ষে আগমনে ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটে।একথা সত্য যে,তাঁর আগমনের বহু আগেই ইসলাম ও মুসলমানদের ভারতবর্ষে আগমন ঘটে এবং অনেক সুফী সাধক ইসলাম প্রচারে নিজেদের নিয়োজিত করেন। কিন্তু হজরত মঈনুদ্দিন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি আগমনে ইসলাম প্রচারে এক বিপ্লব ঘটে এবং তা একটি সামাজিক বিপ্লবেও রূপান্তরিত হয়।সামাজিক নানা কুসংস্কার,ও শিরক কার্যকলাপ বিদূরিত হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় প্রচুর মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকা। তার প্রচেষ্টায় লাখ লাখ পথহারা সত্যবিমুখ মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে।ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে তাঁর এ সাফল্যের মূলে ছিল সুদৃঢ় ঈমান, কঠোর সাধনা ও নেক আমল। এছাড়া পবিত্র কোরআন ও হাদিসের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক, তেজোদীপ্ত প্রভাব বিস্তারকারী আধ্যাত্মিক শক্তি, আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, নিঃস্বার্থ মানবসেবা, ইসলামি শিক্ষার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ও তরিকার প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রভৃতি। পৃথ্বিরাজের শাসনামলেই আজমিরের বাইরেও বাদায়ুন, বেনারস, কনৌজ, নাগুর ও বিহারে তিনি খানকা তৈরি করেছিলেন।
এই মহান সাধকের সময়ে আফগানিস্তানের অন্তর্গত ঘোর প্রদেশের শাসনকর্তা শাহাবুদ্দীন মুহাম্মদ ঘোরী ভারত আক্রমণ করেন। দিল্লীর সন্নিকটে উভয়ের মধ্যে চরম যুদ্ধ হয় এবং সেই যুদ্ধে দেড়শ ভারতীয় রাজন্যবর্গ পৃথ্বীরাজের পক্ষ অবলম্বন করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন,কিন্তু তাঁদের সকল প্রতিরোধ চূর্ণ করে ঘোরী বিজয়ী হন এবং পৃথ্বীরাজকে জীবিত অবস্থায় বন্দী করা হয়। এভাবে এই মহান সাধকের দোআয় এই অত্যাচারী শাসকের হাত থেকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ রেহাই পান।

 ওফাত 
------------✦
আল্লাহর এ আধ্যাত্মিক অলি ১২৩৬/১২৩৭ সালে ৬৩২/৬৩৩ হিজরীর ৫ রজব দিবাগত রাত অর্থাৎ ৬ রজব সূর্যোদয়ের সময় রাতের কোনো এক সময় পরিপূর্ণভাবে সত্যের আলো প্রজ্বলিত করে দিয়ে তিনি সবার অজান্তেই ইন্তেকাল করেন। তখন তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।ভারতের আজমিরে অবস্থিত তারাগড় পাহাড়ের পাদদেশে (আজমির শরীফে)তাঁর সমাধিস্থল।

✽ বন্ধুরা--✦
গরিব নওয়াজই উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলাম প্রচারক। নিখিল ভারতে ইসলামের ভিত্তিকে সুদৃঢ়ভাবে তিনিই স্থাপন করেছেন আর তারই দোয়ায় ভারতবর্ষে মুসলিম রাজত্বের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। - আমি ক্ষুদ্র জ্ঞানে চেস্টা করেছি মাত্র,সবাইকে অনুরোধ করছি আমার এই লেখাটিতে ভুল হলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না প্লীজ।


নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম আম্মা বা’দ।
যুগে যুগে জ্ঞানের আলোকবর্তিকা নিয়ে যেসব মনীষী পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন,যারা অন্যায় ও অসত্যের কাছে কোনোদিন মাথানত করেননি, ইসলাম ও মানুষের কল্যাণে সারা জীবন যারা পরিশ্রম করে গেছেন তাদের অন্যতম হজরত মঈনুদ্দিন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি। আমাদের মহানবী বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী ইমামুল মুরসালীন,হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওছাল্লাম বলেছিলেন,আমি তোমাদের জন্য রেখে যাচ্ছি ২টি জিনিস যা আকড়ে ধরলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবেনা আর তা হলো আল্লাহর কোরআন এবং আমার সুন্নাহ। ১৪০০ বছর আগের সেই বাণী আজ আমাদের কাছে পৌঁছার পিছনে অনেকেরি অবদান রয়েছেন যাদের অন্যতম আল্লাহ পাকের প্রিয় বান্দারা যাদের কে আমরা ওলি আল্লাহ বা আল্লাহর বন্দু বলে থাকি। এখন প্রশ্ন : ওলি কারা ?
উত্তর দেয়ার পূর্বে এটাই বলে রাখি যে আজকাল আমাদের সমাজে যাদের মুর্খতার কারণে আজ ওলির সঙ্গাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে এরা কী আসলে ওলি ! নাকি------ তা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যদি আপনার জানা থাকে ওলির সঙ্গা। আসলে ওলিরা তাদের ইহকালীন জীবনে বিপথগামী মানুষকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওছাল্লাম এর সুন্নতের রজ্জু আঁকড়ে ধরে সঠিক পথে থাকার দিশারী হিসেবেই কাজ করেছেন।বন্ধুরা সত্যের অন্বেষণ করাটাই যেন হয় আমাদের কাজ।
✦ ওলি (وليّ) শব্দের অর্থ, আল্লাহর প্রিয়পাত্র/বন্ধু বা অভিভাবক। আরবী ভাষায় “আউলিয়া” শব্দটি “ওলি'র বহুবচন। তারাই আল্লাহর প্রিয়পাত্র হন যারা সত্যিকারভাবে আল্লাহকে ভয় করে জীবন পরিচালনা করেন, সৎ আমল করেন, তার আদেশগুলো বাস্তবায়ন করেন এবং নিষেধকৃত বিষয়গুলো থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখেন এবং কোরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখেন।
❋আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ওলি সম্পর্কে ইরশাদ করেন, أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
মনে রেখো যারা আল্লাহর (ওলি) বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।
الَّذِينَ آمَنُواْ وَكَانُواْ يَتَّقُونَ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে।
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা।(সুরা ইউনুছ আয়াত :৬২-৬৪)
❋পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন,
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ-যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র।
وَمَن يَتَوَلَّ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ فَإِنَّ حِزْبَ اللّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ
আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী।( সূরা মায়িদা,আয়াত ৫৫-৫৬)
❋আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেন, وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِينَ আর আল্লাহ পরহেযগারদের বন্ধু। (সূরা জাসিয়া:১৯)
❋আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেছেন- وَاللّهُ وَلِيُّ الْمُؤْمِنِينَ আর আল্লাহ হচ্ছেন মুমিনদের বন্ধু। 
(সূরা আলে ইমরান ৬৮)
❋আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে আরো বলেছেন-
اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوُرِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ أَوْلِيَآؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে। (সূরা বাকারা ২৫৭)
❋আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওছাল্লাম বলেন, যে বান্দার চেহরা দেখলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে খোদার ভয় আসে সেই ওলি।
❋হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওছাল্লাম আরো বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﻯ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻴًّﺎ ﻓَﻘَﺪْ
ﺁﺫَﻧْﺘُﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﺮْﺏِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻤَّﺎ
ﺍﻓْﺘَﺮَﺿْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﻳَﺘَﻘَﺮَّﺏُ ﺇِﻟَﻲَّ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﻓِﻞِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺃُﺣِﺒَّﻪُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺘُﻪُ ﻛُﻨْﺖُ ﺳَﻤْﻌَﻪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺴْﻤَﻊُ ﺑِﻪِ ﻭَﺑَﺼَﺮَﻩُ ﺍﻟَّﺬِﻱ
ﻳُﺒْﺼِﺮُ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﺒْﻄِﺶُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺭِﺟْﻠَﻪُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺇِﻥْ
ﺳَﺄَﻟَﻨِﻲ ﻟَﺄُﻋْﻄِﻴَﻨَّﻪُﻭَﻟَﺌِﻦْ ﺍﺳْﺘَﻌَﺎﺫَﻧِﻲ ﻟَﺄُﻋِﻴﺬَﻧَّﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺮَﺩَّﺩْﺕُ ﻋَﻦْ
ﺷَﻲْﺀٍ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺎﻋِﻠُﻪُ ﺗَﺮَﺩُّﺩِﻱ ﻋَﻦْ ﻧَﻔْﺲِ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦِ ﻳَﻜْﺮَﻩُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕَ ﻭَﺃَﻧَﺎ
ﺃَﻛْﺮَﻩُ ﻣَﺴَﺎﺀَﺗَﻪُ .
হজরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার ওলির(বন্ধু) সাথে শত্রুতা করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে। আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে।অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি। যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে কিছু চাইলে, আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে,তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই।আমি যা করার ইচ্ছা করি,সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুগি না কেবল মুমিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার মন্দকে অপছন্দ করি।(সহিহ বুখারী৬৫০২)

❋ শেখ সাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, 'মনুষ্যত্ব গোশত, চর্বি ও চর্ম (দেহ) নয়; মনুষ্যত্ব বন্ধু (আল্লাহর) তুষ্টি ছাড়া অন্য কিছু নয়।


✦ সম্মানিত বন্ধুরা-এ থেকে বুঝতে পারি মুমিনরাই আল্লাহর ওলি,যারা ঈমান আনবে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করে
এবং আল্লাহর অনুগত থাকে নিষিদ্ধ সকল প্রকার হারাম কাজ বর্জন করে তাকওয়া অবলম্বন করবে কোরআন ও সুন্নাহ মত চলে তারাই ওলি।আসলে যারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতী থাকেন তারাই


(মোমিন মুত্তাকীরাই)ওলি আল্লাহ বা আল্লাহর বন্ধু।
❋এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (সূরা হুজুরাত১৩)

 পরিচিতি 
---------------✦
হজরত মইনুদ্দিন চিশতী (উর্দু معین الدین چشتی) হলেন চিশতীয় ধারার ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক। তিনি গরিবে নেওয়াজ (غریب نواز) নামেও পরিচিত। তিনি ভারতে চিশতী ধারার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক সিলসিলা এমনভাবে পরিচিত করেন পরবর্তীতে তার অনুসারীরা যেমন,বখতিয়ার কাকী,নিজমুদ্দিন আউলিয়াসহ আরো অনেকে ভারতের ইতিহাসে সুফি ধারা এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।তিনি ১১৪১ সালে ৫৩৬ বা ৫৩৭ হিজরি সনে ইরানের কুরাশান (অধুনিক আফগানিস্তানে) সিস্তান প্রদেশ’র চিশ্ত শহরের উপকণ্ঠে সানজর গ্রামে আত্ম্যাতিক পুরুষ মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম খাজা গিয়াসুদ্দিন হাসান। মাতার নাম উম্মুল ওয়ারা। তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন।পিতার তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করেন। শৈশবে কুরআন হিফজ করেন।
পরে জ্ঞানার্জনের জন্য প্রথমে সমরকন্দ ও পরে বোখারা গমন করেন। বোখারায় তিনি মাওলানা শরফুদ্দিন ও মাওলানা হাসান উদ্দিনের ন্যায় জগদ্বিখ্যাত আলেমদের কাছে এলমে শরিয়তের জ্ঞান অর্জন করেন। পিতার উত্তরাধিকার হিসাবে একটি ছোট আঙ্গুরের বাগান থেকে জীবিকা অর্জন করা শুরু করেন। এ বাগানে একদিন কাজ করার সময়ে সুফি ইব্রাহিম কান্দুজি নামক একজন আল্লাহওয়ালা বুজুর্গের সংস্পর্শে এসে তার জীবনের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়।তিনি একজন মানবসেবক ও আধ্যাত্মিক সাধক ছিলেন।কোরআন ও হাদিসের গভীর জ্ঞান অর্জন করার পর তিনি আত্মশুদ্ধির জ্ঞান অর্জনের জন্য হক্কানি পীর-মাশায়েখদের সন্ধানে সিরিয়া, হামাদান, কিরমান, তাবরিজ, বোখারা, সমরখন্দ, আস্তারাবাদ, হিরাত, বালখ প্রভৃতি স্থান সফর করেন। অবশেষে বোখারা থেকে নিশাপুরে আসেন। সেখানে চিস্তিয়া তরীকার অপর প্রসিদ্ধ ছুফি সাধক হজরত ওসমান হারুনি চিশতি (রহ.)-এর কাছে বায়াত হয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে মনোনিবেশ করেন।এবং একজন পরিপূর্ণ মোমিন হিসেবে নিজেকে বিকশিত করেন।মানুষকে সত্য ও সুন্দরের এবং ইসলামের শান্তি বাণীর সন্ধান দেওয়াই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।৫৮৩ হিজরীতে তিনি পবিত্র হজ্ব ব্রত পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফ যান। তিনি আরব থেকে ইরাক, ইরান ও আফগানিস্তান হয়ে ভারতের আজমিরে বসতি স্থাপন করেন।

 ধর্ম প্রচার 
----------------✦
হজরত মঈনুদ্দিন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন পাক-ভারত উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে কিংবদন্তিতুল্য একজন ঐতিহাসিক ছুফি ব্যক্তিত্ব। তিনি স্বীয় পীর উসমান হারুনীর নির্দেশে ভারতে আগমন করে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেন এবং তারই মাধ্যমে বহু লোক ইসলাম গ্রহণ করেন।তিনি ভারতবর্ষে আগমনে ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটে।একথা সত্য যে,তাঁর আগমনের বহু আগেই ইসলাম ও মুসলমানদের ভারতবর্ষে আগমন ঘটে এবং অনেক সুফী সাধক ইসলাম প্রচারে নিজেদের নিয়োজিত করেন। কিন্তু হজরত মঈনুদ্দিন চিশতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি আগমনে ইসলাম প্রচারে এক বিপ্লব ঘটে এবং তা একটি সামাজিক বিপ্লবেও রূপান্তরিত হয়।সামাজিক নানা কুসংস্কার,ও শিরক কার্যকলাপ বিদূরিত হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় প্রচুর মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকা। তার প্রচেষ্টায় লাখ লাখ পথহারা সত্যবিমুখ মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে।ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে তাঁর এ সাফল্যের মূলে ছিল সুদৃঢ় ঈমান, কঠোর সাধনা ও নেক আমল। এছাড়া পবিত্র কোরআন ও হাদিসের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক, তেজোদীপ্ত প্রভাব বিস্তারকারী আধ্যাত্মিক শক্তি, আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, নিঃস্বার্থ মানবসেবা, ইসলামি শিক্ষার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ও তরিকার প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রভৃতি। পৃথ্বিরাজের শাসনামলেই আজমিরের বাইরেও বাদায়ুন, বেনারস, কনৌজ, নাগুর ও বিহারে তিনি খানকা তৈরি করেছিলেন।
এই মহান সাধকের সময়ে আফগানিস্তানের অন্তর্গত ঘোর প্রদেশের শাসনকর্তা শাহাবুদ্দীন মুহাম্মদ ঘোরী ভারত আক্রমণ করেন। দিল্লীর সন্নিকটে উভয়ের মধ্যে চরম যুদ্ধ হয় এবং সেই যুদ্ধে দেড়শ ভারতীয় রাজন্যবর্গ পৃথ্বীরাজের পক্ষ অবলম্বন করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন,কিন্তু তাঁদের সকল প্রতিরোধ চূর্ণ করে ঘোরী বিজয়ী হন এবং পৃথ্বীরাজকে জীবিত অবস্থায় বন্দী করা হয়। এভাবে এই মহান সাধকের দোআয় এই অত্যাচারী শাসকের হাত থেকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ রেহাই পান।

 ওফাত 
------------✦
আল্লাহর এ আধ্যাত্মিক অলি ১২৩৬/১২৩৭ সালে ৬৩২/৬৩৩ হিজরীর ৫ রজব দিবাগত রাত অর্থাৎ ৬ রজব সূর্যোদয়ের সময় রাতের কোনো এক সময় পরিপূর্ণভাবে সত্যের আলো প্রজ্বলিত করে দিয়ে তিনি সবার অজান্তেই ইন্তেকাল করেন। তখন তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।ভারতের আজমিরে অবস্থিত তারাগড় পাহাড়ের পাদদেশে (আজমির শরীফে)তাঁর সমাধিস্থল।

✽ বন্ধুরা--✦
গরিব নওয়াজই উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলাম প্রচারক। নিখিল ভারতে ইসলামের ভিত্তিকে সুদৃঢ়ভাবে তিনিই স্থাপন করেছেন আর তারই দোয়ায় ভারতবর্ষে মুসলিম রাজত্বের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। - আমি ক্ষুদ্র জ্ঞানে চেস্টা করেছি মাত্র,সবাইকে অনুরোধ করছি আমার এই লেখাটিতে ভুল হলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না প্লীজ।

নবী প্রেমিক ইমাম শেরে বাংলা রহঃ


নবী প্রেমে বিভোর প্রেমিক হৃদয়ের আকুলতা নিয়ে দরুদ পড়েন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর। নিজের জীবনকে বিকিয়ে দেন নবীজির সুন্নাত বাস্তবায়নে। এমন এক নবীপ্রেমিক হযরত আল্লামা আজিজুল হক শেরে বাংলা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, যাঁর পুরো হৃদয় জুড়ে নবী প্রেমের উর্বর ক্ষেত্র। নূরের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র নুরের ফুলকির উল্কিতে উদ্ভাসিত আশেকে মোস্তফার ব্যাকুল মন তাঁর। পৃথিবীর কোন সম্পদ, যশ, খ্যাতি যাঁকে টানেনা, শুধু টানে সবুজ মিনারের অদৃশ্য এক মায়াবি প্রেম। হাটহাজারী থানার অন্তর্গত মেখলের সৈয়দ বংশে ১৯০৬ সালে জম্ম নেন এই আশেকে মোস্তফা। প্রবল মেধার অধিকারী এই আশেকে রাসুল প্রাথমিক ও উচ্চতর শিক্ষা লাভের পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য দিল্লির বিখ্যাত ফতেহপুর আলীয়া মাদ্রসায় ভর্তি হন। যদিও এই অসাধারণ মেধার অধিকারী শেরে বাংলা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করেন, মূলত তাঁর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না। কারণ, খোদাতায়ালার পক্ষ থেকে তিনি এক আশ্চর্য ইলমের অধিকারী ছিলেন, যা দেখে অনেকে তাঁকে জীনের ছেলে বলেও আখ্যা দিতেন। তিনি ছিলেন এক বিরল নবী-প্রেমিক, যাঁর হৃদয়ের পুরো প্রান্তর নবীপ্রেমে ভরপুর, যে ভালবাসায় তিনি সিক্ত আজীবন। দুশমনে নবী দেখলে তিনি একেবারে বেসামাল হযে পড়তেন, তাদের সাথে তর্কে লেগে যেতেন। তাঁর জীবনে তিনি বহু দুশমনে নবীর সাথে বাহাস করেছেনে এবং জয়ী হয়েছেন। জয়ী হবেনও না কেন? এমন নির্ভিক বাঘের সাথে লড়বে কোন বীর? তিনি তো একটি পূর্ণাঙ্গ লাইব্রেরির মত, যাঁর সামনে বিশ্ব বিখ্যাত আলেমরাও বেলুনের মত চুপসে যেত। তিনি ছিলেন ইলমের এক মহাসাগর, যে মহাসাগরের ঢেউ-এ দুশমনে নবীরা আঁছড়ে পড়ে যেত। তাঁর সামনে অনেক আলেমও ওয়াজ ও কথা বলতে চরম ভয় পেতেন। হাটহাজারীর খন্দকিয়াতে ১৯৫১ সালের ২ জুন তিনি বাতিলের হামলার শিকার হন। মৃত্যু নিশ্চিত করে বাতেলরা স্থান ত্যাগ করে। পরে ত্াঁকে যখন হাসপাতালে নেয়া হয়, সেখানে চিকিৎসকগণ প্রথমে তাঁর ওফাত নিশ্চিত করেন; কিন্তু পরক্ষণে তাঁর মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হতে দেখা যায়। যখন তিনি চোখ খুললেন, তিনি তখন বললেন, এই মাত্র রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জীবন ফিরিয়ে দিয়ে গেছেন, সুবহানাল্লাহ। জানা গেছে, তিনি আরো বলেন, হযরত ফাতিমা যাহরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা রসূলে পাকের দরবারে এ বলে তাঁর জীবন ভিক্ষা চান যে, এখনো দুশমনে রসূল ও আহলে বায়তের শত্রুদের মোকাবেলার কাজ অনেক বাকী আছে, এ মহান কাজের জন্য শেরে বাংলা আজিজুল হকের বেঁচে থাকা দরকার। সুতরাং রসূলে পাক ফরিয়াদ করেন এবং আল্লাহর দরবার থেকে তাঁর হায়াতের মঞ্জুরী নেন। তিনিও একথাটাই বলেছিলেন। ১৯৫৭ সালে শেরে বাংলা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হজ্ব পালনের নিমিত্তে পবিত্র মক্কায় গমন করেন। বাতেলরা এখানে হুজুরকে ঘায়েল করতে না পেরে সৌদি সরকারকে চিঠি দিয়ে জানায় যে, তিনি ওহাবীদের ঘোর বিরোধী তাঁকে যেন গ্রেফতার করা হয়। সৌদি পুলিশ হুজুরকে গ্রেফতার করে সৌদি সরকারের গ্র্যান্ড মুফতীর নিকট নিয়ে যায়। সেখানে গ্র্যান্ড মুফতি হুজুরের জাহেরী ও বাতেনি ইলম দেখে নিজেই হুজুরের ভক্ত বনে যান এবং তাকে শেরে বাংলা উপাধি দিযে সম্মানিত করেন। আর বাকী মুফতীগণও তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরিকত আল্লামা ছৈয়দ আহমদ ছিরিকোটি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির সাথে আল্লামা শেরে বাংলা রাহমাতুল্লাহে আলাহির ছিলো আত্মার সম্পর্ক। কারন এ দু’ মহান ওলীর উদ্দেশ্য ছিলো এ দেশে সুন্নিয়াত প্রতিষ্ঠিত হোক আর বাতিলরা নিপাত যাক। বাংলার জমিনে সুনিয়তের প্রসারে তিনি ছিলেন এক নিবেদিত প্রাণ। ৬৩ বছরের সংগ্রামী জীবনের অবসানে তিনি ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাতে এ মহান অলি ইন্তেকাল করেন।

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬

তাবলিগ জামাত নিয়ে ২৪ টা প্রশ্ন

তাবলিগ জামাত নিয়ে ২৪ টা প্রশ্ন

আশরাফুল আলম রনি নামে একজন দেওবন্দি কমেন্ট করেছে দেখে নিন আগে (

ইসলামের জ্ঞানে জ্ঞানী আলেম , পীর মাসায়েখ , সুফী সাধকরায় তবলিগ করবে সেটা কি আল্লাহ কোরআনে বলেছেন ? দাওয়াত ও তবলীগের কাজ সকল মুসলিমের উপর ফরজ । বর্তমান সূরা ইয়াসিনের উক্ত আয়াতের বানি অনুযায়ি বর্তমান ইলিয়াস রহঃ এর পদ্ধতিতে প্রচারিত তবলিগ দল এক মাত্র হক দার । তারা কোন দিনও কারো কাছে দুনিয়াবি কিছু চেয়েছে ? পারলে তাদের মত কাউকে দেখান । সুফীবাদের আসল রুপ

আমি অনার  এই কমেন্ট এর জবাবে বলেছিলাম যে , আমি আপনার এই কমেন্টের লিখিত জবাব দিতে তাই । আপনি কি পাল্টা জবাব দিবেন ? 

তিনি বেস্ততা দেখালে আমি অনাকে ১৫ দিন সময় দেই। ও আশা প্রকাশ করি যে আমাদের লিখনি সুন্নি দেওবন্দি বিভেদ কে ঐক্য পরিনত করবে । তিনি আমার শর্তে রাজী হয়ে আল্লাহর মদদ আশা করেন । ( আল্লাহ তাকে সহায়তা করুন ) 

মুল কথা ;- 

আমার দাবি তাবলিগের কাজ  হল ইসলামের জ্ঞানে জ্ঞানী আলেম ওলামা  পীর মাসায়েখ সুফি সাধকরা তাবলিগের কাজ করবে । 

যারা মুর্খ তারা করবে না তাবলিগের কাজ । 

জবাবে তিনি বলেছিলেন যে ;- 

ইসলামের জ্ঞানে জ্ঞানী আলেম , পীর মাসায়েখ , সুফী সাধকরায় তবলিগ করবে সেটা কি আল্লাহ কোরআনে বলেছেন ? দাওয়াত ও তবলীগের কাজ সকল মুসলিমের উপর ফরজ । বর্তমান সূরা ইয়াসিনের উক্ত আয়াতের বানি অনুযায়ি বর্তমান ইলিয়াস রহঃ এর পদ্ধতিতে প্রচারিত তবলিগ দল এক মাত্র হক দার । তারা কোন দিনও কারো কাছে দুনিয়াবি কিছু চেয়েছে ? পারলে তাদের মত কাউকে দেখান । সুফীবাদের আসল রুপ


এখন দলিল নিন ;- 

মাওলানা ইলিয়াছ সাহেব তার মালফুজাত নং ৫০ এ বলেছেন নিজের তৈরি তাবলিগ জামাত সম্পর্কে কোরানের বানী ( তোমরাই শ্রেষ্ট উম্মত , যাহাদিগকে মানুষের উপকারের জন্য বাহির করা হইয়াছে , তোমরা সৎ কাজের আদেশ কর ও অসৎ কাজের নিষেধ কর ও আল্লাহ পাকের উপর ঈমান আন । 

মালফুজাত নং ৫০ ।



তিনি উপরোক্ত  মালফুজাত এ আরো বলেছেন যে ;- এই আয়াতের তাফসীর ও খাবে এই রুপ এলকা হইয়াছে যে , তোমরা নবীদের মত মানুষের উপকারের জন্য প্রেরিত হইয়াছ (মালফুজাত নং ৫০) 







এরুপ আপনারা আরো কয়েকটা আয়াত দলিল দিয়ে থাকে দেওবন্দি তাবলিগিগন  । যেমন সুরা ইমরান এর ১০৪ নং আয়াত । 



সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ করতে হবে আমাদের সকল কে । এটাই চরম সত্য কথা । কিন্তু সকলের একটা সীমা আছে । আমি আমার আলু ওজন করার দাড়ী পাল্লা দিয়ে যেমন পাহাড় ওজন করতে পারব না , বরং পাহাড় মাপতে গিয়ে নিজের আলু ওজনের দাড়ীপাল্লা নষ্ট হবে , তেমনি প্রতিটি বিষয় । 



জাকির নায়েক যেমন ডাক্তারি ছেড়ে দিয়ে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে দিনের পরে দিন ফেতনা তৈরি করতেছে , ঠিক তেমনি যদি সারা জীবন খেটে খাওয়া মানুষ আসে কোরান ও হাদীস ফেকাহ নিয়ে কথা বলতে , তবে হয়ত একদিন ফতোয়া দিয়ে বসবে জমিনে কিটনাশক ব্যবহার করা হারাম । কারন তাতে কিট মরে । 



উল্লেখ্য যে সুরা ইমরান আয়াত নং ১০৪ এ আল্লাহ তায়ালা বলেন ;- 


 “অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে একদল এমন হওয়া উচিৎ যারা কল্যাণ বা ইসলামের দিকে লোকদেরকে আহ্বান করবে, সৎ কাজের নির্দেশ দিবে এবং মন্দ কাজে নিষেধ করবে। আর তারাই হচ্ছে কামিয়াব বা সফলকাম।” (সুরা আলে ইমরান-১০৪)
উপরোক্ত আয়াতেও তোমাদের মধ্যে একদল লোক’ এই কয়টি শব্দ দ্বারা ইহাই পরিষ্কারভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, দাওয়াত বা তাবলীগ করার নির্দেশ সমস্ত মুসলমানদের উপর নয় বরং মুসলমানদের মধ্যে একদল অর্থাৎ আলেম সম্প্রদায়ের উপর ফরজ করা হয়েছে। এই আয়াতে নির্দেশিত তাবলীগ ইসলামের প্রথম যুগ হতে অদ্যাবধি ওলামায়ে কেরামগণ ও ওলি আল্লাহগণ এবং হাক্কানী পীর মাশায়েখগণ করে আসছেন এবং করবেন এই ধরার বুকে যতদিন মানুষের আবির্ভাব ঘটবে।
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ‘তাফসীরে বায়জাভী’তে বলা হয়েছে-“ আয়াতে مِنْكُمْ(মিনকুম) এর ﻤﻥ ‘মিন’ শব্দটি কতক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কেননা সৎ কাজের নির্দেশ দান করা ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করা কিছু সংখ্যক লোকের উপর ফরজ, যাকে ফরজে কেফায়া বলে। কারণ এ কাজ সম্পাদনের জন্য যে শর্তাবলী রয়েছে, যেমন- শরিয়তের বিধি-নিষেধ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া, এলমে মারেফত সম্পর্কে জ্ঞান থাকা, আহকাম বা বিধি-নিষেধের তাৎপর্য এবং এগুলি প্রয়োগ ও প্রতিষ্ঠা বা বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্বন্ধে অবগত হওয়া ইত্যাদি। অথচ এ সমস্ত শর্ত সকলের মধ্যে পাওয়া যায় না।”
আল্লামা আবু আবদিয়াহ মুহাম্মদ বিন আহমদ আনসারী (রহ.) তদ্বীয় ‘কুরতুবী শরীফ’ এর জুজে বাবে ১৬২ পৃষ্ঠায় উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন-
“আয়াতে উল্লেখিত مِنْكُمْ (মিনকুম) এর ﻤﻥ‘মিন’ শব্দটি ‘তাবঈজ’ বা কতক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, এর মর্মাথ হলো-নিশ্চয়ই উল্লেখিত বিষয়সমূহ (কল্যাণের দিকে আহবান, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ) উলামায়ে কেরামের উপর ওয়াজিব কেননা প্রত্যেক লোক আলেম নহে। কারণ নেক কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ ফরজে কেফায়া।
এতে সহজেই বুঝাযায় যে, তাবলীগ ফরজে কেফায়া। যেমন- জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়া। অর্থাৎ কিছু সংখ্যক লোক আদায় করলে সকলের আদায় হয়ে যায়। তেমনিভাবে তাবলীগও ফরজে কেফায়া। কিছু সংখ্যক লোক তথা ওলামায়ে কেরামগণ ও ওলি আল্লাহগণ এবং হাক্কানী পীর মাশায়েখগণ আদায় করলে সকলের আদায় হবে যাবে।
তাফসীরে জালালাইন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, “উক্ত আয়াতের ﻤﻥ ‘মিন’ শব্দটি দ্বারা কিছু সংখ্যক লোককে বুঝানো হয়েছে, কেননা তাবলীগে দ্বীন সম্পাদন করা ফরজে কেফায়া অর্থাৎ কিছু সংখ্যক লোকের উপর ফরজ। এ নির্দেশ সকল উম্মতের প্রতি নয়। কারণ প্রত্যেক ব্যক্তি এ কাজের যোগ্য নয়। যেমন-জাহিল বা মূর্খ ব্যক্তি।”

আপনাদের জন্য স্বনামধন্য কিতাব তাফসীর ইবনে কাছির এর ৪থা খন্ডে ১৩৬ নং পেজে উক্ত আঁয়াতের  তাফসীর করতে গিয়ে লিখেছেন যে ;- হযরত যাহহাক (র) বলেন যে ;- উক্ত আয়াতের অর্থ হচ্ছে বিশিষ্ট সাহাবা ও হাদীসের বর্ননা কারী ।অর্থাৎ মুজাহীদ ও আলেমগণ ।  

তো উপরের বর্ননা গুলো যে কোন তাফসীর কিতাব থেকে মিলিয়ে নিবেন দয়া করে । 
সকল তাফসীরে উক্ত আয়াতের ব্যাখা বা তাফসীর একই  বলা হয়েছে । 

তো এখান থেকে পরিষ্কার যে , তাবলিগের কাজ কোন মুর্খ জন সাধারনদের জন্য নয় । 

বরং এটা একটা দলের কথা বলেছে । সবাই চাইলে সেই দলে যেতে পারেন না । 

যুদ্ধ করতে হলে আগে ট্রেনিং থাকতে হবে । 
ডাক্তারি করতে গেলে মেডিকেলে পড়তে হবে । 
এমন কি জমিতে ফসল ফলাতে হলে কৃষানের সাথে মাঠে দীর্ঘ দিনের প্রাকটিক্যাল জ্ঞান থাকতে হবে । 


অথচ তাবলিগ করবে ইসলামের আর ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে না তা কি করে হয় ? 

উপরোক্ত আয়াত ও তাফসীর থেকে এটা দিনের মতই পরিষ্কার যে , মাওলানা ইলিয়াচ সাহেব স্বীয় ৫০ নং মালফুজাত এ যে আয়াতে পাকের বর্ননা দিয়েছেন ও নিজের তৈরি তাবলিগ জামাত কে সম্পৃক্ত করেছেন তা নিতান্তই ভুল  ছিল । আর আবসোস যে দেওবন্দি জামাত অন্ধের মত তা বিস্বাস করে নিয়েছে । 


আর আপনি যে ব্যাখা দিয়েছেন তাবলিগের কাজ সকল মুসলিমদের উপরে ফরজ তা আপনার মত একজন শিক্ষিত লোক মুর্খদের মত কি করে এমন কথা বললো তা চিন্তা করতেছি এখন । 

যদি কোন কোরানের আয়াত থাকে সকল মুসলমানদের উপরে ফরজ হয়েছে তাবলিগের কাজ , কোন নির্ভরযোগ্য তাফসীর থেকে যদি তুলে ধরতে পারেন তা হলে অবশ্যই কবুল করব বলে ওয়াদা করলাম আমি । 

আর হা , আপনাদের দেওবন্দিদের কোন তাফসীর তুলে ধরবেন না দয়া করে। আর আমি নিজে ও কোন আমাদের সুন্নি আলেমের কিতাবের রেফারেন্স তুলে ধরতেছি না। কারন না আমি আপনাদের কথা গ্রহন করব না আপনি আমার কথা।  বরং নিরপেক্ষ পুর্বরতিদের কথা থেকে তুলে ধরুন । 


উপরের সকল আলোচনা থেকে আপনাকে প্রমান করতে হবে হাদীস কোরান বা কোন নির্ভরযোগ্য তাফসীর ও ফেকাহ থেকে এমন কি নির্ভরযোগ্য পুর্বরতি আলেমের বক্তব্য থেকে যে ;- 

(১) মাওলানা ইলিয়াছ সাহেবের ৫০ নং মালফুজাত এ যে আয়াতের ব্যাখা দিয়ে তার তৈরি তাবলিগ জামাত কে উল্লেখিত আল্লাহর মনোনীত দল বলে সম্বোধন করেছেন , তার নির্ভর যোগ্য দলিল  । 

(২) তাবলীগ আলেম ওলামা পীর মাশায়েখ সুফি সাধকের জন্য নয় , বরং সকল মুসলমানের জন্য ফরজ ।

উপরের সকল আলোচনা থেকে আপনার কাছে ২ টা প্রশ্ন শুধু থাকল ।


পরের আলোচনা ;--

বেদাতি তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াছ মেওয়াতি এর (মালফুজাত এ মাওলানা ইলিয়াছ ) এর ৪২ নং মালফুজাত এ বলেছেন যে ;-  মুসলমান হচ্ছে দুই প্রকার , তৃতীয় কোন প্রকার নাই।  (১) যারা আল্লাহর রাস্তায় (তাবলীগের) বাহির হইবে।  (২) যারা তাদের সহায়তা করবে। 
তিনি বললেন , খুব ভাল বুঝিয়াছেন । অতপর বলছিলেন , লোককে বাহীর হইবার জন্য তৈরি করাও সাহায্যর মধ্য শামীল। তাহাদের কে বলিবে , তোমরা বাহীর হইলে অমুক আলেমের কোরান শরীফ ও অমুক আলেমের বুখারি শরিফে শিক্ষাদানে কোন ব্যাঘাত হবে না । তাবা হলে তোমরা ও উহাদের পড়ানোর সওয়াব। পাইবে । এই প্রকারের নিয়তের কথা বস্তা লোকদের সওয়াবের রাস্তা দেখানো উচিত

 মালফুজাত নং ৪২ 

৪২ নং মালফুজাত পুরা তুলে ধরলাম।  কারন হয়ত পরে বলবেন যে , আমি কেটে ছেঁটে তুলে ধরেছি । 

উপরের মাওলানা ইলিয়াছ এর বক্তব্য থেকে এটা পরিস্কার যে ;- তার মতে যারা তাবলিগে যাবে তারা এক মুসলমান , 
আর যারা তাহাদের কে সহায়তা করবে তারা আর এক মুসলমান । অন্যথা কোন মুসলমান নাই । এটা পরিষ্কার দিনের মতই।  

উক্ত মালফুজাত থেকে কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাই ।
প্রশ্ন নং (৩) 
মুসলমান দুই প্রকার ভিন্ন তৃতীয় প্রকার মুসলমান যদি না থেকে থাকে , তা হলে মাওলানা ইলিয়াচ সাহেবের তৈরি তাবলীগ জামাতের আগে কি ভারতবর্ষ ও দুনিয়ার বুকে  মুসলমান ছিল না ? 

প্রশ্ন নং (৪) 
যদি মুসলমান না থেকে থাকে তা হলে কারা এই কথিত তাবলীগ তৈরি করল ? ইহুদি ? নাকি খৃষ্টান ? 

(৫)  আর মাওলানা ইলিয়াছ সাহেবের সম্মনিত পিতা ও বড় ভাই যিনি গাংগুহী সাহেবের শিষ্য ছিলেন , রশীদ আহমেদ গাংগুহী , কাশেম নানুতভী  এই সকল প্রমুখ আলেমগণ মাওলানা ইলিয়াচ সাহেব তৈরি তাবলিগে যেতে পারেন নাই ও সহায়তা ও করতে পারেন নাই । এমন কি আপনাদের পীরদের পীর হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজের এ মক্কি (রহ) ও পারেন নাই মাওলানা ইলিয়াছ এর তৈরি তাবলিগে যেতে বা সাহায্য করতে । 

এমন কি সাহাবা কেরাম তাবা তাবেয়ীগন ও পারেন নাই মাওলানা ইলিয়াছ সাহেবের তাবলিগে  যেতে বা সাহায্য করতে । তারা কি সবাই অমুসলিম ছিলেন ?
 তারা কি মুসলমান ছিলেন না ? 



যে মেওয়াত থেকে , বা কারা এই তাবলীগ জামাত তৈরি করল , তা একটু দেখে নেয়া যাক আপনাদের কিতাব থেকে । 

আবুল হাসাল আলী নদভী লিখেছেন যে ;- 

 তাদের মুর্খতা ও ধর্ম বিশাস এতটাই নিচে নিচু স্তর এর ছিল যে ১৮৭৮ এর একজন ইংরেজ ভূমি প্রসাশন অফিসার বর্ণনা করেছেন যে মেও জনগোষ্টি মেয়াতি মুসলমান  হলেও তা সুধু নাম মাত্র। হিন্দু জমিদারের উপাস্য দেবতাই মেওয়াত এর মুসলমানদের দেবতা। সবে বরাত,ঈদ , ও মহররম এর চেয়ে হাসি খেলার গুরুত্ব কোনো অংশেই কম নয়। হিন্দুদের পূজা, হলি, জন্মাষ্টমী , দসহারা ইত্যাদি বেশ কিছু হিন্দু পরব মেওয়াত এর মুসলমান রা পালন করে থাকে। বিয়ে সাদী (শুভক্ষণ ) এ ব্রাক্ষণ পুরোহিত কে ডেকে নির্ধারণ করা হয়। রাম ছাড়া সব হিন্দুদের নাম তারা নামের সাথে গ্রহণ করে। তাদের নামের সাথে শেখ, সাইয়েদ , খান,  হক না থাকলে ও শিং এর বহুত বেবহার দেখা যায়। (মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত ) পৃষ্টা ৭২-৭৩ 



হিন্দুদের মতই মেওয়াত এর মুসলিম রা কাজকর্ম বন্ধ রেখে অমাবস্যা ও কৃষ্ণপক্ষ পালন করে। নতুন কুপ খনন এর আগে হনুমানের নাম চাবুতালা তৈরী করে নেয়। তবে লুটতরাজ এর বেলায় মন্দির ভিত্তিক বিশেষ কোনো ছার পায় না। বরং মন্দিরের পবিত্রতা কেউ বোঝাতে গেলে সোজা বলে দেয়:-

( তোমরা তো হলে দেও- আর আমরা হলাম মেও) পৃষ্টা ৭৩) 



ধর্মীয় জ্ঞান এ এরা এতটাই অজ্ঞ যে ২-১ জন কালেমা জানলে ও নামাজি তাও নেই। ইল্লোরের কাছে একটা মসজিদ ও মাদ্রাসা থাকায় তারা একটু আগ্রহ দেখাত ও নামাজি ও দেখা যেত। তাদের বিয়ের দিন খন পুরোহিত ঠিক করলে ও মূল পর্ব হত কাজী সাহেব কে দিয়ে। পাজামার চল নেই। ধুতি পরত সবাই। সোনার গহনা পরত সবাই। মূলত তারা হিন্দুদের অনুগামী ছিল। ( মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত ) পৃষ্টা ৭৩ 



তো জনাব আশরাফুল আলম রনি @ এই হচ্ছে মেওয়াত জনগোষ্টির নমুনা । এমন মুসলিম সমাজ থেকে আমাদের জন্য এই তাবলীগ এসেছে । যারা নিজেকে আধা হিন্দু , তারা আজ মসজিদে এসে হাত ধরে বলে বাবা কালেমা পড় । 

আমার হাত ধরেও কেউ কালেমা পড়তে বলেছিল । তখন বলেছিলাম আমি জন্ম নিয়েছি মুসলিম হয়ে। হিন্দুর ঘরে নয়। আমার জন্মের পরে কানে আজান দেওয়া হয়েছে , নতুন করে মুসলিম হতে হতে মা। শুধু আহকাম অনুসরন করলেই হবে। বরং হিন্দুদের কাছে যান কালেমা পাঠা করাতে । 

বেচারার মুখ তখন এমন হয়েছিল যে , মনে হয় দিন দুপুরে হিমালয়ে ধাক্কা খেল । 



তো এখন প্রশ্ন  হল যে ,

(৬) 

যদি এমন সমাজের এমন আদা হিন্দু দিয়ে কেউ তাবলীগ করাতে চায় , যা আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদির আলেম সমাজের জন্য নির্ধারিত করেছেন , তবে তাদের কে দিয়ে কি দ্বীনের খেদমত হবে  ? নাকি বেদাত ও মুশরিকের ফতোয়া মারা হবে   ? 



প্রশ্ন নং (৭)  

হাদিসে আছে বনী ইস্রালের নবীদের ন্যায় আমার উম্মতের আলেম । যাদের কে আল্লাহ তায়ালা তাবলিগের জন্য মনোনীত করেছেন । এই আপনাদের মুর্খ তাবলিগি গুলো কি বলা ইস্রাইলের নবীদের ন্যায় ? 



এর পর সাইয়েদ আবাল হাসান আলী নাদ্ভির লেখা কিতাব (মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত ) এর ১১৪ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে মাওলানা ইলিয়াছ মিয়া কিছু লোক সাহারানপুর ,রায়পুর,থানা ভবন এ পাঠাতে চাইলেন ও তাদের প্রতি মাওলানা ইলিয়াছের নির্দেশনা ছিল যে বুজুর্গদের সামনে তাবলিগ প্রসঙ্গ উক্খাপন করবে না। বুজুর্গ গণ কিছু জিজ্ঞাসা করলে জবাব দিবে। নিজে থেকে কছুই বলতে যাবে না। (মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত পৃষ্টা ১১৪-১১৫ ) 



উপরের রেফারেন্স থেকে এটা পরিস্কার যে ;- মাওলানা ইলিয়াত সাহেবের নিজের ও ভয় ছিল চরম ,  যে সেই সময়ে নতুন তৈরি কথিত তাবলিগ জামাত কে লোকে ঠেঙ্গানী না দেয় । তাই বুযুর্গ বেক্তিদের সামনে তাবলিগ বা তাদের আসল উদ্দেশ্য বিষয় বলতে  মানা করেছিলেন।  

এখন প্রশ্ন  নং ৮ ;-



যদি তাবলিগ সকল মুসলমানদের জন্য ফরজ হয় , তবে  এমন পবিত্র ফরজ কাজ আদায় করতে যারা যায় , তাদের কে আপনাদের এই মহান ফরজ তাবলিগ প্রসঙ্গে বুযুর্গদের সামনে কথা বলতে বা তুলে ধরতে কেন মানা করলেন ? 

প্রশ্ন নং ৯ ;-

নাকি এটা একটা নতুন বেদাত , পুর্বরতিদের তাবলিগের বিরোধী , এক নব ফেতনা  ?

প্রশ্ন নং ১০ ;- 

নাকি  মুসলমানদের কে তাদের পুর্বরতিদের তরিকা পথ রাস্তা , থেকে দুরে নিয়ে যাবে , ও বুযুর্গদের সামনে তুলে ধরলে তারা গলা ধাক্কা দিবে তার ভয়ে ? 


আবুল হাসান আলী নদভী লিখিত ;- মাওলানা ইলিয়াছ (রহ) ও তার দ্বীনি দাওয়াত নামক কিতাবের ৬৯ নং পেজে লিখেছেন যে ;- ইতিরুর্বে হযরত থানভীর মনে ও সন্দেহ ছিল যে , ৮-১০ বৎসর মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহন করা আলেমদের দিয়ে ও তাবলিগের আশানুরুপ ফল পাওয়া যাইত না । বরং নতুন নতুন ফেতনা সৃষ্টি হইয়ো পরিবেশ আরো জটিল হইয়া যাইতেছিল । সেই খানে এই মুর্খ মেওয়াতির দ্বারা তাবলিগের কি সাফল্য বলবে ? এই কথা হযরত থানভী বুঝিয়া উঠতে পারিতেছিলেন না । তাহার পুতিনক সন্দেহ ছিল যে ;- এই তরিকায় তাবলিগের কাজ করাতে নতুন ফেতনার সৃষ্টি না হইয়া যায় । 


এর একটু নিচে নাদভী সাহেব লিখেছেন যে ;- হযরত থানভীর আর একটা সন্দেহ ছিল যে ;- দ্বীনের যথেষ্ট ইলম ব্যাতীত এই সমস্ত লোক তাবলীগের গুরু দায়ীত্র কি রুপে পালন করিয়ে ??
কিন্তু যখন মাওলানা জাফর আহমেদ উসমানী বলিলেন , তাবলিগ জামাতের লোকটা যতটুকু বলিবার হলা হইয়াছে তত টুকুই বলেন । এর বাইরে কোন কথা বলেন না । নতুন কোন প্রসঙ্গ নিয়ে কোন আলোচনা করেন না ।তখন থানভী (রহ) এর এই সন্দেহ দূর হইল ।( আবুল হাসান নদভী লিখিত মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত ) পৃষ্টা নং ৬৯ ।

 

মাওলানা থানভী সাহেব ও জানতেন যে যাদের কে দিয়ে তাবলিগের কাজ শুরু করা হয়েছে তারা ছিল মুর্খ অশিক্ষিত । আর থানভী সাহেব এটা ও জানতেন যে ;- তাবলীগের কাজ আলেম সমাজের জন্য । 

আর তাবলিগ জামাতে যারা যায় তারা সত্যিকারের তোতা পাখি । তাদের কাছে শিরক বেদাত কবর পুজারী মাজার  পুজারী এই কথা গুলো শিখিয়ে দেয়া হয় , যে তোমরা তাবলিগিগন ছারা বাকি সব বেদাতি মুশরিক । 

এখন প্রশ্ন হলে (১১)  ;- আপনার থানভীর মতে তাবলিগ কাজ হল শিক্ষিতের জন্য ।
কিন্তু আপনাদের তাবলিগ জানাত কি মুর্খদের আড্ডা খানা নয় ? 

প্রশ্ন নং (১২) ;- আলেমদের কাজ তাবলীগ করা , কিন্তু মুর্খদের দিয়ে তাবলিগ তৈরি করে এটা কি বুযুর্গদের কোরান হাদিসের বিপরিত নয় ? 


আবুল হাসান আলী নদভী লিখিত (মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত ) কিতাবের ৬৮ নং পৃষ্টাতে লিখেছেন যে ;- একবার মাওলানা ইলিয়াচ সাহেব মাওলানা যাকারিয়া সাহেব কে লিখেছেন যে ;- আমার দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা এই যে ;- তাবলিগের জামাতগুলি , তরিকতের বুজুর্গদের খানকাগুলিতে গিয়ে খানকার পুর্ন আদব রক্ষা করত , সেখানকার ফয়েয বরকত গ্রহন করুক ।খানকায় অবস্থানের সময়ের মধ্যই আসে পাশের গ্রামগুলিতে গিয়ে দাওয়াতের কাজ ও যেন জারী থাকে । আপনি এই বিষয়ে আগ্রহী লোকদের সাথে আলোচনা করিয়ে একটা নিয়ম ঠিক করিয়ে রাখুন। বান্দা নাজীচ( ইলিয়াছ সাহেব ) কিছু সংখ্যার সঙ্গী সাথী নিয়ে এই সপ্তাহে হাজীর হইতেছে । তারপর দেওবন্দ ও থানা ভবনে যাওয়ার ইচ্ছা আছে ( মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত ) পৃষ্টা নং ৬৮ ।

আপনাদের মাওলানা ইলিয়াছ সাহেব এই চিঠি লিখেছিলেন নিজের আপন জামাতা মাওলানা যাকারিয়া সাহেব কে । 

এবং তাতে লিখেছিলেন যে ;- বুজুর্গদের খানকাগুলিতে অবর্তমান করত খানকার সম্মান বজায় রেখে ও তার মধ্য পাশের গ্রামগুলিতে দাওয়াত দেয়ার জন্য ।

এখন প্রশ্ন হল যে (১৩) 

আপনারা কি কোন বুজুর্গদের দিনের খানকাগুলিতে গিয়ে থাকেন ? নাকি শুধু মসজিদে ঘুমান ? 

প্রশ্ন নং ১৪ 
যদি দিয়ে থাকেন বুজুর্গদের খানকাগুলিতে , তবে বলুন এখন আমাকে যে , কোন বুযুর্গের খানকায় আপনার কোন দল কত দিন ছিল ? 
বা আপনি নিজে কোন বুযুর্গের খানকায় আপনি নিজে ছিলেন ? 

আপনাদের হয়ত জানা নাই যে তাবলিগ জামাতের প্রধান কাজ হচ্ছে পীর মুরিদির প্রচার করা। বিশ্বাস হয় না ? দেখুন :- 

বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের অন্যতম একজন আলেম ও মুফতি মাহমুদ হাসান গান্গুহির খলিফা শায়খুল হাদিস হজরত মাওলানা মামুনুর রশিদ সাহেব (দা;বা;) কে আশা করি তাবলিগ জামাতের কথিত ঠিকাদার গণ জানেন। তিনি মশা আল্লাহ অনেক উর্দু কিতাব বাংলায় অনুবাদ করা ছাড়া ও নিজ হাতেও মনে হয় কয়েকটা কিতাব লিখেছেন।



যাই হোক ওনার অনুবাদ কৃত মাওলানা জাকারিয়া (রহ) এর (আকাবির কা সুলুক ও এহ্সান ) ১৪ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- তাবলিগ জামাতের পূর্ববর্তী আকিদা বিচ্যুতির ফলে বাধ্য হয়ে কলম তুলে নিলাম , কিছু কালামে পাকের আয়াত ও হাদিস ও মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত (আবুল হাসান আলী নাদ্ভির লেখা ) মালফুজাত এ মাওলানা ইলিয়াছ ( মাওলানা মঞ্জুর নোমানী কর্তৃক সংগ্রহিত ও সংকলিত ও অনুবাদ ডা; মোহাম্মদ ছানাউল্লাহ বেরিসটার ) অনুসরণে একটা কিতাব লিখলাম তার নাম দিলাম (রাসুলুল্লাহ (সা )এর দাওয়াত-তাবলিগ এবং হজরত মাওলানা ইলিয়াছ এর তাবলিগ ও পীর মুরিদী)  

এখন প্রশ্ন নং ১৫ ;-

আপনাদের  মামুনুর রশীদ সাহেব যিনি আপনাদের মাহমুদ হাসান গাংগুহীর খলিফা , তিনি মনে করেন যে বরি্কমান তাবলিগ জামাত বুযুর্গদের তাবলিগ জানাত থেকে সম্পুর্ন বিচ্যুত  । আর আপনি বলেছেন বর্তমান  তাবলিগ জামাত একমাত্র হক দল । এটা কি করে সম্ভব যে , পীরের চেয়ে মুরিদ ভাল জানে ? 



প্রশ্ন নং ১৬ ;-
যেখানে একজন খলিফা বর্তমান তাবলিগ কে বিচ্যুত বলে , সেখানে কি করে অন্যরা এটাকে নাজাতের পথ ও নবীওয়ালা কাজ দিবে করতে পারে ? 

পরের কথা ;- 

অকবির কা সুলুক ও এহসান কিতাবের ১৬ নং পৃষ্টায় আবার লিখেছেন যে ;- সেই কিতাবের বিষয়বস্তু ছিল দাওয়াত তাবলিগ - মাদ্রাসা ইলম হাসিল করা -পীর মুরিদী ইসলাহী মেহনত করা।

এটাই হল কোরানের আদেশ ও নবীর আদেশ এবং মাওলানা ইলিয়াছ (রহ) এর তরিকা এটাই মুমিন মুসলমানদের তরিকা হওয়া চাই ,মুরিদ না হলে কি শাস্তি হবে সে বিষয় মুসলিম সরিফের ২য় খন্ডের ১২৮ পৃষ্টায় বর্ণিত হাদিস কঠোর ভাষা সেই কিতাবে উল্লেখ করা হল।



আপনাদের মাহমুদ হাসান সাহেবের খলিফা মামুনুর রশীদ সাহেব লিখেছেন যে ;- তাবলিগের কাজ হল মাদ্রাসা ইলম হাসিল করা ও পীর মুরিদি ইসলাহী মেহনত করা ।



আপনাদের কৌমি মাদ্রাসায় সকল ছাত্রই তো তাবলিগে গিয়ে থাকেন বলা চলে । এখন জিগ্গেস করতে চাই যে , 

প্রশ্ন নং ১৭  ;- আপনি আল্লাহর ওয়াস্তে সত্য করে বলুন , কোন পীরের হাতে বাইয়েত হয়েছেন ?  

প্রশ্ন নং ১৮ আর এটা ও বলুন , বর্তমান ইজতেমা তে কে কার পীর ? কে কার খলিফা ? 



প্রশ্ন নং ১৯ :- আর এটা ও বলুন যে , তারা কোন বযুর্গের দরবারে কতদিন ছিল ? 



পরের আলোচনা ;- 

 আকাবির কা সুলুক ও এহসান কিতাবের ২০ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- হজরত মাওলানা ইলিয়াছ (রহ) তাবলীগের নামে পীর মুরিদীর ও জিকির আজকার এর যে মেহনত চালু করেছেন এবং তা করতে সকল কে আদেশ করেছেন ও আমলি নমুনা পেশ করেছেন তাও জেনে এই বেপারে আমার মনস্থির হল যে ;- তাবলীগের নামে পীর মুরিদীর প্রচার করা। (আকাবির কা সুলুক ও এহসান কিতাবের ২০ নং পৃষ্টা)




একটু নিচেই লিখেছেন যে ;- কিতাব টা মানুষের হাতে পৌছানোর সাথে সাথে অনেক কানা ঘুসা সুরু হয়ে গেল। একজন তাবলিগ জামাতের জিম্মাদার তো বলেই ফেললেন যে ;- মুরিদ না হয়ে মরলে যদি বেইমান হয়ে মরতে হয় তা হলে আর মুরিদী হব না, যদিও মুরিদ হওয়ার ইচ্ছা ছিল। পৃষ্টা ১৬

এখন প্রশ্ন হল ২০;- 

আপনাদের মাহমুদ হাসান গাংগুহীর খলিফা মামুনুর রশীদ সাহেবের কিতাবের বিষয় সমালোচনা বা একজন খলিফা হুজুরের কিতাবের সমালোচনা করা ও বিরাধিতা করার পরিনাম ইসলাহী মোহনের বেলায় পরিনতি কি নিয়ে আসতে পারে ? 

প্রশ্ন নং ২১ ;- আপনাদের মুজাদ্দেদ আশরাফ আলী থানবী তার কিতাবে লিকেছেন যে :- মুরিদ বিনয় , সম্মান ও সম্ভ্রম এর সাথে তার পারদর্শী শায়েখ এর অনুগত থাকবে যেমন মাইয়েত (মৃত বেক্তি) গোসল দাতার হাতে চুপ চাপ থাকে। ( আদাবুল মুয়াসারাত , শায়েখ এর আদব অধ্যায়, পৃষ্টা ৮৯-৯০ । 

এখন কথা হল যে :- একজন তাবলিগ জামাতের সামান্য জিম্মাদার যদি এমন গর্ব করে কথা বলে যে ;- মুরিদ না হয়ে যদি বেইমান হয়ে মরতে হয় , তবে বেইমান হয়ে মরব । এমন যদি হয় জিম্মাদারের অবস্থা , তবে যারা আজ মাত্র শুরু করেছে তাবলিগে যেতে তারা কোন পর্যায় আছে ?  




যাই হোক একটু নিচে আবার লিখেছেন যে ;- কেননা মাওলানা ইলিয়াছ সাহেব নিজে ১০ বছর বয়সেই মাওলানা রশিদ আহমাদ গান্গুহির হাতে মুরিদ হন , ১০ বছর রশিদ আহমাদ এর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেন এর পর ওনার মিত্তু হলে রশিদ আহমদের খলিফা মাওলানা খলিল আহমাদ সাহারান পুরীর হাতে মুরিদ হন ও খেলাফত লাভ করেন । আর এক জনের নাম মনে আসছে না তিনি তার কাছে জিহাদের জন্য ও মুরিদ হয়েছিলেন। 

এখন প্রশ্ন হল (২২) ;- 

আপনি/আপনারা  কত বছর বয়সে মুরিদ হয়েছেন ? 



প্রশ্ন নং ২৩ ;- আর কার কার হাতে মুরিদ হয়েছেন ? 


মাওলানা ইলিয়াছ সাহেবের মিত্তুর আগের রাত্রের দিন বুধবার মাওলানা জাকারিয়া কে বলেন যে ;- এই তাবলিগ জামাতের মধ্যে ৬ জন লোক গুরুত্বপূর্ন ,জারা আমার হাতে মুরিদ হতে চান তারা যেন এই ৬ জনের মধ্যে হতে যার কাছে ইচ্ছা মুরিদ হয়। এই ৬ জনের নাম হচ্ছে ;- (১)মৌলভি ইউসুফ (২) মৌলভি এনামুল হাসান (৩) মৌলভি রেজা হাসান (৪) মৌলভি ইহ্তিশামুল হাসান (৫) হাফেজ মক্বুল হাসান(৬) ক্বারী দাউদ 

পরে মাওলানা ইলিয়াছ সাহেবের মিত্তু হলে মৌলভি ইউসুফ কে সর্বসম্মতি ক্রমে মুরিদ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। (আকাবির কা সুলুক ও এহসান) পৃষ্টা ২১



প্রশ্ন নং ২৪;- বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে কে মুরিদ করিয়ে থাকেন ? 

আজকের ইজতেমা তে কে আপনাদের সকল খলিফা গনের পীর ? 



কয়েকদিন আগে একজন আপনাদের তাবলিগির সাথে কথা বলেছিলাম।  সে বলেছিল তার জিম্মাদার তার পীর । 

মাহমুদুস সুলুক কিতাবে রশিদ আহমেদ গাংগুহীর খেলাফত পাওয়া বিষয়ে হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজের এ মক্কি (রহ) এর ঘটনা টা তুলে ধরেছিলাম।  তখন বেচারা চুপ হয়ে গিয়েছিল । 



আপনি যদি মনে করেন যে ;- জিম্মাদারগন আমাদের পীর তবে একজন পীর কেমন হয় তা তুলে ধরব আপনাদের কিতাব থেকে । তখন কিন্তু বিপদ বেড়ে যাবে কয়েকদিন । 



আজকের পোষ্ট আর বড় করতে চাইতেছি না । এর পরে অন্য ছোটখাট বিষয় গুলো নিয়ে কথা হবে ইনশাল্লাহ । 



টোটাল প্রশ্ন মনে হয় ২৪  টা হয়েছে